ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অতিরিক্ত জোয়ারে জলাবদ্ধতায় ও প্রবল বর্ষণে মাঠে পানি জমে আমন বীজপাতা নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। দুই মাস পরে নতুন করে চরা দামে আমন বীজপাতা কিনে মাঠে রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কৃষক বলছেন পাশর্^বর্তী গ্রাম থেকে দুই হাজার থেকে সর্বনিম্ন ৬ টাকা দরে আমন বীজপাতা ক্রয় করে মাঠে এনে রোপণ করছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তর কৃষকদের খোঁজখবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষি নির্ভরশীল উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নঅঞ্চলগুলো গত ২ মাস পূর্বে জলাবদ্ধতায় আমন বীজপাতা পচন ধরে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে সাধারণ কৃষকেরা। চাষিরা তাদের ফসলি মাঠে ঘুরে দাড়াতে নতুন করে গত এক সপ্তাহ ধরে চরা দামে বিভিন্ন স্থান থেকে আমন বীজপাতা কিনে এনে বপন করছেন। সদর ইউনিয়নের পশ্চিম বিশারীঘাটা ষাটই খানা কৃষক রুস্তুম আলী শেখ, মোস্তফা ফরাজী, পল্লীমঙ্গল গ্রামের জব্বার শেখ, ধানসাগর গ্রামের আবু হানিফসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, বন্যায় পানির চাপে বীজপাতা নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ফসল ফলানোর জন্য বীজপাতা পার্শ্ববর্তী নিশানবাড়িয়া গ্রাম থেকে ২ হাজার টাকা পোন কিনে এনে মাঠে রোপণ করতে হচ্ছে। খারইখালী গ্রামের জাফর আলী খান বলেন, তার সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-১১, ২২ ও ২৩ বীজপাতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ৭০০ টাকা পোন বীজ কিনে এনে রোপণ করছেন। একই গ্রামের মুছা ফরাজী বীজপাতা কিনে এনে রোপণ করছেন। কৃষক জলিল শেখ বলেন, তার ১৬ বিঘা জমির ২১ বস্তা বীজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে ১৪ বস্তা বীজ ফেলেছেন। এ রকম কৃষক মোহাম্মদ আলী তার ১৪ বিঘা জমির বীজপাতা নষ্ট হওয়ায় নতুন করে বীজপাতা ক্রয় করতে পারেননি। এদিকে কৃষি দপ্তর বলছেন আমন বীজপাতা সংকট নাই অতিরিক্ত রয়েছে। অথচ মাঠ পর্যায়ের চিত্র ভিন্ন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এ বছর উচ্চ ফলনশীল আমন ধান মাঠে রোপণ হয়েছে ৪,৫০০। ২৫ হেক্টর জমিতে এবং স্থানীয় জাতের আবাদ করা হয়েছে ৪,২৮৫ হেক্টর জমিতে। প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতায় আমন বীজতলা ০.২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পঞ্চকরণ ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতায় দেবরাজ, পঞ্চকরণ ও খারইখালীর কিছু অংশে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আমন বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে, অন্য সব বছরের চেয়ে ৩ গুণ বীজপাতা হয়েছে অনেক স্থানে সেখান থেকে আমন বীজপাতা এনে রোপণ করতে পারছেন কৃষক। তেমন একটা সমস্যা হবে না। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের আমন বীজপাতার সংকট নাই। জলাবদ্ধতায় উপজেলায় ২ হেক্টর জমি প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, পানি নেমে যাওয়ার পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে অন্য সব বছরের চেয়ে আমন বীজপাতা অনেক বেশি হয়েছে। যে কারণে কৃষক এ বীজপাতা বিক্রিও করতে পারবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত