ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঝুঁকিপূর্ণ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন দ্রুত সংস্কার দাবি

ঝুঁকিপূর্ণ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন দ্রুত সংস্কার দাবি

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা নিশ্চিতে স্থাপিত হলেও এখানে এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। মূল ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত ঘরে সীমিত সেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্যসেবার জন্য আসা রোগীদের নানামুখী ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের অধিকাংশ জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়েছে, ছাদ দিয়ে চুইয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। এতে ভিজে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আর নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান ওষুধপত্র। দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরায় ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন একমাত্র উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৫ নং চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিত চিঠি দিয়েছি এবং মৌখিকভাবেও জানিয়েছি। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধু আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা সালমা বেগম বলেন, বৃষ্টির সময় ভেতরে পানি পড়ে, তখন চিকিৎসা নিতে খুব কষ্ট হয়। ওষুধও ভিজে যায়। নতুন ভবন হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।

রোগীর স্বজন রহিম মিয়া বলেন, এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা নিতে ভয় লাগে। কিন্তু এই ইউনিয়নের মানুষের আর কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয়রা আরো জানান, শুধু ভবন নয়, পর্যাপ্ত জনবল আর আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামও প্রয়োজন এই দ্বীপ ইউনিয়নে। তারা আশা করছেন, দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ হলে চিকিৎসাসেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ভোগান্তিও কমবে। এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ভবনটি সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু হবে।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র ভরসা চালিতাবুনিয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু জরাজীর্ণ ভবন, জনবল সংকট আর সীমিত সেবার কারণে স্বাস্থ্যসেবার স্বপ্ন প্রতিনিয়ত ভেঙে যাচ্ছে। তাই স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত