
ফার্মাসিস্ট মাসুদ করিম ভেবেছেন কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সদর বাজার থেকে শাক-সবজি কিনবেন। সকালবেলা বাজারে ছুটে গেছেন উপজেলা সদরের এই বাসিন্দা। বাজার ঘুরে দেখেন প্রতি আঁটি লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। আঁটিও ছোট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, শেষ কবে এত বেশি দামে শাক কিনেছি ঠিক মনে করতে পারছি না। ২০-৩০ টাকার কমে কোনো শাকের আঁটি কিনতে পারিনি। বিক্রেতারা যেভাবে দাম চাচ্ছেন, মনে হচ্ছে তারা মুখস্থ বুলি বলছেন। মাসুদ করিম বলেন, আগে এক আঁটি লাল শাকে সহজেই একবেলার ভাজি হয়ে যেত। এখন আঁটিতে শাক কম, আগাছা বেশি। ফলে ছোট পরিবারের জন্য অন্তত দুই আঁটি কিনতে হচ্ছে, দামও বেশি।
কিন্তু কী আর করা কিনতে তো হবেই। গতকাল সোমবার সকালে তাড়াইল উপজেলা সদর বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি আঁটি পুঁইশাক ১৫-২০ টাকা, ডাটাশাক ১৫-২০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা পর্যন্ত, লাল শাক ২০-২৫ টাকা, লাউশাক ২৫-৩০ টাকা, পাটশাক ১৫-২০ টাকা এবং কচুশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাড়াইল সদর কাঁচাবাজারে লাউশাক ও পুঁইশাক বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী আবদুল করিম মিয়া। তিনি বলেন, বর্ষার এই সময়ে শাকের দাম সাধারণত একটু বেশি থাকে। সকালে দাম বেশি থাকে কারণ তখনই বিক্রি ভালো হয়। দুপুরের পর দাম পড়ে যায়, তখন শাক বিক্রি না হলে অনেক সময় ফেলে দিতে হয়। অন্যদিকে ব্যবসায়ী মোতাহার মিয়ার দাবি, শাকের দাম অতিরিক্ত বাড়েনি। তার ভাষায়, পুঁইশাক অনেক দিন ধরেই ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য শাকও আগের দামের কাছাকাছি। শীতকালে পালং, মুলা ও সরিষার শাক বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমে যায়।
তাড়াইল সদর বাজারের অস্থায়ী ব্যবসায়ী শরীফ উদ্দিন বলেন, এক আঁটিতে কতটুকু শাক থাকবে, এর কোনো নিয়ম নেই। যার যেমন খুশি বিক্রি করছে। আট-দশটা ডাটা বেঁধে দেওয়া পুঁইশাকও ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অথচ তা দিয়ে একবেলা রান্নাই হয় না। সবজির দামে পুড়ছে বাজার, সবজির সঙ্গে শাকের দামও চড়া। সাধারণত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের পাতে নিয়মিত ওঠা শাক এখন ২০ টাকার নিচে মিলছে না। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, বৃষ্টির কারণে খেত নষ্ট হওয়ায় শাকের উৎপাদন কমেছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, কার্যকর বাজার নজরদারির অভাবেই শাকের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।