ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হবিগঞ্জে তীব্র লোডশেডিং

জনদুর্ভোগ চরমে
হবিগঞ্জে তীব্র লোডশেডিং

হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুরে অবস্থিত ১১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় গ্রামগঞ্জে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিদ্যুতের ঘন ঘন বিভ্রাটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এনার্জিপ্যাক পাওয়ারভেঞ্চার লিমিটেড ২০০৯ সালে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মালিকানাধীন দুই একর জমিতে কেন্দ্রটি স্থাপন করে। চালু হওয়ার পর থেকে হবিগঞ্জ শহরসহ আশপাশের গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে স্বস্তি ফিরে আসে। শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কেন্দ্রটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে এনার্জিপ্যাক পাওয়ারভেঞ্চার লিমিটেডের আইটি শাখার কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন- চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এপ্রিলে কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। ভবন ও যন্ত্রপাতিসহ মালামাল বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধের পর থেকে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট ও আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। দিবারাত্রি ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মিজান মিয়া বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা চালানোই কঠিন হয়ে গেছে। দোকানে ফ্রিজ চলে না, লাইট বন্ধ থাকে, বিক্রি কমে গেছে অর্ধেকে।

শিক্ষার্থী কামরুল হোসেন বলেন, রাতে পড়াশোনা করতে পারি না, ইন্টারনেট ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ থাকলে পড়ার পরিবেশ থাকে, এখন ঘরে গরমে থাকা দায়। চুনারুঘাটের কৃষক মধু মিয়া জানান, ফসলের মৌসুমে সেচ দিতে পারছি না। বিদ্যুৎ গেলে পাম্প চলে না, জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন- এনার্জিপ্যাকের উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। নতুন উৎস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে। তবে কিছু সময় লাগবে।

স্থানীয়দের মতে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করা গেলে লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে ও গ্রামীণ জনজীবনে স্বস্তি ফিরবে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম জিল্লুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত