জুয়া গোটা পৃথিবীতে ছোঁয়াচে রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশেও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে এরইমধ্যে অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে গরিব মধবিত্ত পরিবারগুলো দিশাহারা অবস্থা।
বিভিন্ন খবরের মাধ্যমে জানতে পারি ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে গৃহপালিত গরু-ছাগল ও বিক্রি করে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে সমাজের এবং পরিবার এর মধ্যে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করছে। যারা বাংলাদেশ থেকে এসব ওয়েবসাইড পরিচালনা করেন, আমরা আশা করব- অচিরেই আইনের আওতায় আনা হোক। যুবসমাজ অবক্ষয়ের মূল কারণ হচ্ছে এ অনলাইন জুয়া বা ক্যাসিনো, এই অনলাইন জুয়াটা আসক্ত একবার যদি কেউ জুয়া খেলে। তাকে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব, কারণ এখানে টাকার লোভ সামলাতে পাওে না। বেকার যুবক রা এ খেলায় আসক্ত তাদের তো আয় রোজগারের সুযোগ নেই।
রাত-বিরাতে ছিনতাই, ডাকাতি করে টাকা সংগ্রহ করার জন্য মানুষ খুন করছে।
তাদের ভবিষ্যৎ যে ঘোর অমাবস্যায় আবদ্ধ আজ ঝকঝকে তকতকে পরিষ্কার।
ইদানীং আরেক বিষয় চোখে পড়ে মোবাইলে লুডু খেলা এখানেও কিন্তু জুয়ার আসর বসে, ৫২ তাসের ৫৩ খেলা চিরসত্য বাণী হচ্ছে। তাসের ঘর ক্ষণস্থায়ী চিরকাল ধ্বংস বা বরবাদ সবকিছুই ফলাফল শূন্য। রম্য কথাসাহিত্যিক শফিক হাসান বলেছেন; বাঙালি সোজাপথে হাঁটতে চায়না বাঁকা পথেই চলতে পছন্দ করে, গ্রামীণ একটা প্রবাদ আছে; শাক দিয়ে ভাত খাব সোজা পথ ধরে হেঁটে যাব; কিন্তু আফসোস বাঙালি আজকাল মন্দ পথে চলছে, জুয়া খেলা লোকসান বা ক্ষতি এটা বুঝেও খেলত বাধ্য হচ্ছে। কারণ এই অনলাইন জুয়া এমন কিছু কৌশল অবলম্বন করেছেন আপনাকে আকৃষ্ট করেই ছাড়বে।
অনলাইন জুয়ায় বাজি ধরা সমাজ অবক্ষয় হচ্ছে এসব দেখভাল কে করবে।
শুধু কি প্রশাসনের ভূমিকা বড় করে দেখছেন। বিষয়টা কিন্তু ভুল; আপনি জেনে বুঝে বিপদগামী পথে যাত্রা করছেন। প্রশাসন কি আপনাকে পাহারা দেবে? না, বাংলাদেশে যারা এসব অ্যাপস বা সাইড পরিচালনা করেন তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
কয়েক দিন আগেই সংবাদে শুনলাম সরকার এরইমধ্যে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে প্রশাসন কাজ শুরু করছে, আসলে কতটুকু কাজ করছে তা আমার জানা নেই।
অনলাইন ক্যাসিনো ভয়াবহ অবস্থা বিরাজমান। আজকাল মোটামুটি সবার হাতেই দামি ফোন। ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেন প্রায় সবাই। সকলেই অবগত আছেন এসব অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা, যারা এসব অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার প্রচারণা করছেন আমাদের প্রশাসন কি দেখে না, তারা কি কঠিন প্রদক্ষেপ নিতে পারে না, এমন প্রশ্ন করতেই পারি? বাংলাদেশ প্রযুক্তির ব্যবহার যতদিন থেকে অগ্রসর হচ্ছে, সুফল পাচ্ছি অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
কিন্তু প্রযুক্তি অপব্যবহার ক্রমশ বাড়ছেই। এমনিতেই বাঙালি হুজুগের ব্যাপারে খুব পারদর্শী; তার সঙ্গে যদি আরও বেশি এসব জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করেন তো ক্ষতিটা দিন শেষে আমাদেরই হচ্ছে।
অনলাইন জুয়া পাতানো ফাঁদ রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে পরিবারে যে অশান্তি এনে দিচ্ছে তা জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করলেও যারা এ নেশায় আসক্ত তারা বুঝছে না। লেখার ইতি টানব।
পরিশেষে, করজোড়ে অনুরোধ করছি- সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রতি- বাংলাদেশের অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন। অনলাইন জুয়ার চিরতরে বন্ধ করুন।