ঢাকা ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হেনা তো আমার হয়ে গেছে : নাঈম

হেনা তো আমার হয়ে গেছে : নাঈম

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল একটি বক্তব্য- ‘চাচা বাড়িঘর এত সাজানো কেন?’, ‘চাচা হেনা কোথায়?’। এটি মূলত ঢাকাই সিনেমার একটি সংলাপ। বাংলা সিনেমার ট্র্যাজিক হিরো বাপ্পারাজের কণ্ঠে এই সংলাপ বলেছিলেন ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায়। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সেই সিনেমার দৃশ্য নতুন করে ভাইরাল এখন। নেটিজেনরা মেতেছেন ‘চাচা হেনা কোথায়?’ সংলাপ নিয়ে। যে যেখানে পারছেন সংলাপটি যোগ করে দিচ্ছেন নিজের আঙ্গিকে। সিনেমাটিতে ‘হেনা’ চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা শাবনাজ। আর শাবনাজ হচ্ছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক নাঈমের স্ত্রী। যে কারণে ফেসবুকে শাবনাজ-নাঈমের একটি ফটোকার্ড ভাইরাল। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘বিশ্বাস করুন, হেনা আমার কাছে।’ আর সেই ফটোকার্ড নজরে এসেছে নাঈমের। স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টি উপভোগ করছেন এ তারকা দম্পতি। ভাইরাল সেই সংলাপের স্রোতে গা ভাসালেন নাঈমও। তিনি বললেন, ‘আসলেই তো। হেনা তো আমার কাছেই। এই সিনেমা যখন হয়েছে, তার আগেই আমার ও শাবনাজের বিয়ে হয়ে গেছে, অর্থাৎ হেনা আমার হয়ে গেছে।’ নাঈম আরো বলেন, সিনেমার ভিডিও ক্লিপ হঠাৎ কোথা থেকে সামনে এসেছে, কিছুই জানি না। তবে এই সিনেমা যে মানুষ মনে রেখেছে। সংলাপ থেকে সংলাপ, গান সবই উপভোগ করছে, এটা ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য পড়ে বুঝতে পারছি। আমাদের বাচ্চারাও ভীষণ মজা পাচ্ছে। সবাই মিলে আমরা ভীষণ উপভোগ করছি। শিল্পীর এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন।

শাবনাজ বলেন, ‘আমি আর বাপ্পা ভাই তো খুব মজা নিচ্ছি। তবে ভালো লাগছে, মানুষ যে ছবিটার কথা এখন আবার মনে করছে। নায়ক-নায়িকার আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে নিজেরা কানেক্ট করতে পারছেন। ছবিটা তখনো প্রশংসিত হয়েছে। এখনো প্রশংসিত হচ্ছে। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে এটা তো অনেক বড় পাওয়া। মুক্তির পর মানুষ ছবি দেখে, সেই সময়ে হয়তো হিট হয় বা আলোচিত হয়। এরপর তো মানুষ ভুলে যায়। কারণ, এত বছরে এত এত ছবি মুক্তি পেয়েছে, এত এত নতুন গল্প, নতুন সবকিছু- এর মধ্যে ২৯ বছর আগের সেই ছবির কথা ভুলে যাওয়ারই কথা। কিন্তু সেখানে আবার পুরো গল্প নিয়ে, পুরোনো কথা নিয়ে চর্চা হচ্ছে- সত্যি খুব ভালো লাগছে।’ কথা প্রসঙ্গে শাবনাজ বলেন, ‘একটা ভালো সিনেমার শক্তি কত বেশি। এত বছর পরও এ প্রজন্ম সেই ছবির সংলাপ, দৃশ্য ও গানের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করছে এটাই ভীষণ ভালো লাগার। কারণ, এ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের চিন্তাভাবনা তো একেবারেই আলাদা। অন্য রকম। তাদের সঙ্গে আমাদের বিশাল দূরত্বও। এরপরও তারা কানেক্ট করছে। আসলে আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসা তো একই রকম। সর্বজনীন। আবেগ সব প্রজন্মেরই একই রকম। তাই ঠিকঠাকভাবে গল্প উপস্থাপন করতে পারলে তাতে সব প্রজন্মই কানেক্ট করতে পারবেই।’

উল্লেখ্য, ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন বাপ্পারাজ। সিনেমায় তার নাম থাকে বকুল। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে প্রেমিকা হেনার (শাবনাজ) বাড়ি সাজানো দেখতে পান। তিনি হেনার বাবাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? চাচা, হেনা কোথায়?’ জবাবে চাচা বলেন, ‘হেনাকে তুমি ভুলে যাও, হেনার বিয়ে হয়ে গেছে। ’ বকুল তখন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘না না, হেনার বিয়ে হতে পারে না। এ আমি বিশ্বাস করি না।’ এরপর ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে, মনের শিকল ছিঁড়ে, পাখি যায় উড়ে যায়’ গানটি বাজতে থাকে। প্রসঙ্গত, নব্বই দশকের দর্শকনন্দিত জুটি নাঈমণ্ডশাবনাজ। ১৯৯১ সালের ৪ অক্টোবর এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ মুক্তি পায়। সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাঈমণ্ডশাবনাজ জুটির অভিষেক হয়। শফিউল আলম পরিচালিত ‘বিষের বাঁশি’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়েই নাঈম ও শাবনাজের প্রেমের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর বিয়ে করেন তারা। সে হিসেবে সুখের দাম্পত্যের ৩১ বছর পার করে ফেছেন এ তারকা যুগল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত