
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়া এবং ভোটার হওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডনে নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার দুদিন পর গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শহিদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারতের পর নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বনানীতে নিজের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করতে যান তিনি। ২৭ ডিসেম্বরই ভোটার হচ্ছেন তারেক রহমান- বিএনপির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান হয়েছিল আগেই। সেজন্য সব প্রস্তুতিও সেরে রাখে নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষ।
বিএনপি মিডিয়া সেল গতকাল শনিবার দুপুরে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, আঙুলের ছাপ, চোখের মণির (আইরিশ) প্রতিচ্ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার পর তারেক রহমানের এনআইডি পেতে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা লাগবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এসএম হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ভোটার হতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছবি, আইরিশ ও আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। এগুলো ইসির ডাটাবেজে আপলোড করা হয়। ডাটা সেন্টারে থাকা ভোটারদের তথ্যের সঙ্গে ক্রসম্যাচ করা হয়। এরপর একটি নাম্বার তৈরি হয়। এটা সফটওয়্যারে করা হয়। এ কাজে কতো সময় লাগবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ৫ ঘণ্টা, ৭ ঘণ্টা, ১০ ঘণ্টা, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি লাগে, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে একটু কম লাগে।
দুপুর ১টার দিকে নির্বাচন ভবনের পেছনে অবস্থিত নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে যান তারেক রহমান। ওই ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ প্রবাসী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এনআইডি সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত। ওই কক্ষে গিয়ে ছবি তোলা, দশ আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া, চোখের আইরিশ (চোখের মণির ছাপ) ও স্বাক্ষর করার কাজ করেন তারেক রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।
তারেক রহমানকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত আজ : ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, জনাব তারেক রহমান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিএনপি এবং উনার মেয়ে জাইমা রহমান উনারা দুজনে আজকে ভোটার নিবন্ধন ফর্ম জমা দিয়ে এখানে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। ভোটার তালিকা আইনের ২০০৯ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী কমিশনের এখতিয়ার আছে যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক বা ভোটার হওয়ার সক্ষম ব্যক্তিকে ভোটার করতে পারেন এবং সেই বিবেচনায় উনারা ঢাকা ১৯, এই ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় নিবন্ধন হয়েছেন।
ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ধাপের ব্যাখ্যায় আখতার আহমেদ বলেন- এটা আজকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া যেটা আছে, সেটা আমাদের বলা হয় যে-
২। ওই ফর্ম ফিলাপ করে উনারা ছবি তুলেছেন, বায়োমেট্রিক দিয়েছেন এবং দিয়ে উনারা আবেদন করেছেন যে উনাদেরকে যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন আজ কমিশনে এটা পেশ করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে উনাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে। এদিকে, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) জন্য মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আসেন ডা. জুবাইদা রহমান। ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করেন তারা। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা ২৭ মিনিটে জাইমাকে নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আসেন ডা. জুবাইদা। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর তিন মাস নির্বাসন শেষে গত ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তারেক রহমান। দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছেন। ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে তার নাগরিক অধিকার প্রয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ শেষ হলো।