
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহিদ শরিফ ওসমান হাদি, ‘পিলখানা ট্রাজেডি’তে শহিদ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের অবস্থিত হাদির কবর জিয়ারত করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করা হয়। নেওয়া হয় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, বিজিবিসহ কয়েকটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। এরপর গতকাল দুপুরে তিনি বনানীতে ‘পিলখানা ট্রাজেডি’তে শহিদ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তার উপস্থিত ছিলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. একেএম শামছুল ইসলাম। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় শহিদ হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন বীর সেনাকে হারায় বাংলাদেশ। এর আগে গতকাল দুপুরে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন তারেক রহমান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানিয়েছেন। আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার সময় যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে ছিলেন তারেক রহমান। ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেন তারেক রহমান। এই প্রথম ছোট ভাইয়ের কবর জিয়ারত করলেন তিনি। এদিকে, দীর্ঘ ১৭ বছর পর রাজধানীর ধানমন্ডিতে শ্বশুরবাড়ি মাহবুব ভবনে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শনিবার বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটের দিকে গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবন থেকে তাকে বহনকারী গাড়িবহর শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। দলীয় সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী গাড়িবহর গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবন ত্যাগ করে ধানমন্ডির মাহবুব ভবনের উদ্দেশে রওনা হন। অন্যদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত না থাকায় পঙ্গু হাসপাতালে যাননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শনিবার বিএনপির মিডিয়া সেলের এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত না থাকায় তারেক রহমান পঙ্গু হাসপাতালে যাবেন না।’ প্রসঙ্গত, দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেদিন বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে জুলাই-৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় লাখো কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। সেখানে সংবর্ধনা শেষে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এর আগে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পরে সেখানে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে তিনি কুশল বিনিময় ও আলিঙ্গন করেন।