ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘বন্দুকের মুখে’ মুসলমানদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত

এএফপির প্রতিবেদন
‘বন্দুকের মুখে’ মুসলমানদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারত

কোনো ধরনের বিচার ছাড়াই শত শত মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত। আর এই তথ্যটি দুই দেশের কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা কড়া সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, এসব বহিষ্কার বেআইনি এবং জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে করা হয়েছে। খবর এএফপি’র। ভারত সরকারের দাবি, তারা যাদের ফেরত পাঠিয়েছে তারা ‘অবৈধ অভিবাসী’। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী সরকার দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসন, বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও এসব মানুষকে ‘ঘুণপোকা’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে উল্লেখ করেছেন। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের এমন অবস্থান ভারতের প্রায় ২০ কোটিরও বেশি মুসলমানের মধ্যে, বিশেষ করে বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করেছে। ভারতের প্রবীণ মানবাধিকারকর্মী হর্ষ মন্দার বলেন, ‘বিশেষ করে দেশের পূর্বাঞ্চলের মুসলমানরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। লাখো মানুষকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলা হয়েছে।’ ভারতের স্থলপথবেষ্টিত বাংলাদেশে ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে ভারতঘনিষ্ঠ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের কাশ্মীরে ২২ এপ্রিল এক হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন হিন্দু পর্যটক। এর পর ভারতের নিরাপত্তা অভিযান আরও জোরদার হয়। ওই হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে। এর জেরে দুই দেশের মধ্যে চার দিনব্যাপী সংঘাতে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। এই ঘটনার পর ভারতজুড়ে নজিরবিহীন নিরাপত্তা অভিযান চালানো হয়। হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়, যাদের অনেককেই বন্দুকের মুখে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।

‘হাঁটার সাহস করো না, গুলি করব’ : আসামের রাহিমা বেগম বলেন, মে মাসের শেষ দিকে পুলিশ তাকে কয়েক দিন ধরে আটকে রাখার পর বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যায়। তিনি জানান, তার পরিবার বহু প্রজন্ম ধরে ভারতে বাস করছে। ‘আমার জন্ম এখানেই (ভারতে)। আমার মা-বাবা, দাদা-দাদিও এখানকার মানুষ। জানি না তারা আমার সঙ্গে এমন করল কেন,’ বলেন তিনি। পুলিশ তাকে আরও পাঁচজন মুসলিমের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে একটি জলাভূমিতে নামিয়ে দেয়। রহিমা জানান, ‘তারা দূরে একটি গ্রামের দিকে দেখিয়ে বলল ওদিকে হামাগুড়ি দিয়ে যাও। তারা হুমকি দিয়েছিল, দাঁড়িয়ে হাঁটার চেষ্টা করলেই গুলি করবে।’ পরে বাংলাদেশের স্থানীয়রা তাদের খুঁজে পেয়ে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। রাহিমা বলেন, বিজিবি সদস্যরা তাদের আবার ভারত সীমান্তের দিকে ফেরত পাঠায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত