ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফের নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপের ভূমিকা শেষ হয়ে যাবে

পারমাণবিক ইস্যু
ফের নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপের ভূমিকা শেষ হয়ে যাবে

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সতর্ক করে বলেন, দেশটির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হলে তেহরানের পারমাণবিক ইস্যুতে ইউরোপের ভূমিকা শেষ হয়ে যাবে। ২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দেশটির সঙ্গে ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ বা জেসিপিওএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির আওতায় ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত, তবে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রা ৩.৭ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হতো। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হবে। ইসরায়েলের অনুরোধে ২০১৮ সালে ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং পরের বছর ইরানও চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এর আগ পর্যন্ত এটি কার্যকর ছিল। জেসিপিওএ চুক্তির একটি ধারা অনুযায়ী, ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করলে দেশটির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে। গত শনিবার আরাগচি বলেন, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা আবার শুরু করার বিষয়ে খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনা শুরুর সময়, স্থান, কাঠামো, উপাদান ও সম্ভাব্য আলোচনার জন্য ইরানের পক্ষ থেকে যে নিশ্চয়তা প্রয়োজন, তার সবকিছু খতিয়ে দেখছি।’ আরাগচি আরও বলেন, বিশ্বের প্রধান ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েই শুধু আলোচনা হবে, দেশটির সামরিক সক্ষমতা নিয়ে নয়। তেহরানে কূটনীতিকদের উদ্দেশে আরাগচি বলেন, সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়বস্তু হবে শুধু পারমাণবিক কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে এ কর্মসূচি নিয়ে আস্থা তৈরি। অন্য কোনো বিষয় আলোচনার অন্তর্ভুক্ত হবে না।’ গত জুনে ইসরায়েল তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক নেতারা, পরমাণু বিজ্ঞানী ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ব্যাপক হামলা চালায়। এতে শত শত মানুষ নিহত হন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষ্যমতে, গত ১৩ জুন ইরানের হুমকি থেকে ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইরান বলেছে, জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করে বিনা উসকানিতে এ হামলা করা হয়েছে। ইসরায়েলের হামলার পর ইরানও পাল্টা হামলা চালায়। একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে এ সংঘাতে জড়ায়। বাংকার বিধ্বংসী বোমা দিয়ে ইরানের ফর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে। জবাবে ইরান কাতারে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। টানা ১২ দিন ধরে সংঘাত চলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। সংঘাতের পর ইরান জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এর কারণ ছিল সংস্থাটির প্রতি তার গভীর অনাস্থা। গতকাল আরাগচি বলেন, পারমাণবিক সংস্থার সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা ‘নতুন রূপ নেবে’।

কারণ, গত সপ্তাহে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আইএইএর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা স্থগিত করা নিয়ে এক আইনে স্বাক্ষর করেছেন। নতুন আইন অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আইএইএ যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করতে চায়, তবে তাতে সুপ্রিম ন্যাশনাল কাউন্সিলের অনুমোদন লাগবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত