কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস পর হাইকোর্টের আদেশে জেলেরা মাছ ধরার অনুমতি পেয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে ৫টি শর্ত।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরিত এক স্মাকরপত্র সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকে বলা হয়েছে, মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশনের রুলনিশির আলোকে নাফনদীতে জেলে কর্তৃক বৈধভাবে মাছ ধরা কার্যক্রম চালু করতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পিটিশনার কর্তৃক এই কার্যালয়ে গত ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট দাখিলকৃত আবেদন যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে নাফনদীতে মাছ ধরার অনুমতি প্রদান করা হলো।
শর্তসমূহ হলো- ১. সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানায় অভ্যন্তরে নাফনদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবে। ২ . জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবি’র ৫টি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন-পরিচয়পত্র দেখাবে এবং মাছ-ধরা-শেষে-ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। কোনো জেলে চেকপোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবে না। ৩. কোনোক্রমে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না। ৪. মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদান করা যেতে পারে। যাতে কোনক্রমে নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফনদীতে মাছ ধরতে না পারে। ৫. এই অনুমোদ। সম্পূর্ণ সাময়িক। তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
নাফনদীতে মাছ ধরার অনুমতিপত্রটি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফনদীতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ৯ মাস পরে জেলেরা নাফনদীতে মাছ ধরতে পারবেন। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি বলেন, ৭ বছর ৯ মাস পর নাফনদী খুলে দেয়া জেলে সম্প্রদায়ের মাঝেও উল্লাস-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।