
সীমিত সময়ের মধ্যে সম্প্রচার কমিশন, প্রেস কাউন্সিল ও স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন- এ তিন প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ কথা বলেন।
১১ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া পদত্যাগের পর শূন্য হওয়া তিনটি মন্ত্রণালয়ে বর্তমান তিন উপদেষ্টাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের দপ্তর পুনর্বণ্টন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি এত দিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এখন তিনি তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকাল সচিবালয়ে এলে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, সাম্প্রতিক ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে একেবারেই কোনো কাজ হয়নি, তা নয়। তবে ‘আউটকামটি’ আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রচার কমিশন, প্রেস কাউন্সিল ও স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন-এই তিনটিকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন তিনি। তবে তিনি এ-ও উল্লেখ করেন, তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর সময় খুবই সীমিত।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দুই মাসেরও কম আছে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের বিষয়ে নতুন তথ্য উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক দিন আগে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে আলামতের ভিত্তিতে। তিনি যতটুকু জানেন ও বোঝেন, এর বিচার করার বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ অঙ্গীকার আছে।
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বিচার ও তদন্ত যাঁরা করবেন, তাঁদের হাতে বিচারপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কতটুকু তথ্য আছে। প্রতিবারই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারছেন না।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জাতির বিবেকের একটা প্রশ্ন জড়িত। একটা দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারের বড় প্রশ্ন জড়িত। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে সরকার এর বিচার দেখতে চায়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিসহ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, মানুষকে ভয় দেখাতেই এটা করা হচ্ছে। মানুষ যত নির্বাচন চাইছে, মানুষ যত নির্বাচনমুখী হচ্ছে, সরকার যত কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে নির্বাচন নিয়ে, সরকার যত স্পষ্ট অবস্থানে যাচ্ছে নির্বাচন নিয়ে, ততই নির্বাচনের পরিবেশটা একটা ভীতিকর করার জন্য এই কাজগুলো করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসনের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার। তাঁরা স্পষ্ট বলতে চান, ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন হবে। ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের যে ফুটপ্রিন্টটা রয়ে গেছে, সেটার কিছু কিছু আউটকাম এগুলো।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিবৃতির বরাত দিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের ভীতটা দুর্বল করে দিতে এই আক্রমণগুলো হয়েছে। সরকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের হীন, কাপুরুষোচিত ও চক্রান্তমূলক আক্রমণের জবাব দেবে সঠিকভাবে নির্বাচনটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।