ঢাকা শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিল্পপতি সৈয়দ মনজুর এলাহী আর নেই

শিল্পপতি সৈয়দ মনজুর এলাহী আর নেই

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মারা গেছেন; তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এপেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যকে বলেন, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মারা যান মঞ্জুর এলাহী। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। শেষ সময়ে তার পাশেই ছিলেন তার ছেলে, এপেক্স গ্রুপের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন প্রয়োজনীয় কাগুজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে আজ রাতের মধ্যে মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হবে।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন মঞ্জুর এলাহী। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এবং বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে তার জানাজা হবে। পরে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।

অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল বুধবার এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বাংলাদেশের উদ্যোক্তা জগতে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ী ছিলেন। দেশের চামড়াশিল্পকে এগিয়ে নিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার একান্ত পরিশ্রমে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী যোগাযোগ, নৌপরিবহন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে কৃষি, নৌপরিবহন, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

দায়িত্ব পালনকালে তাঁর দক্ষতার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সংগঠক হিসেবেও তার অসামান্য কৃতিত্ব রয়েছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মারা যান মঞ্জুর এলাহী। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। শেষ সময়ে তার পাশেই ছিলেন তার ছেলে, এপেক্স গ্রুপের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন প্রয়োজনীয় কাগুজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে আজ রাতের মধ্যে মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হবে। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন মঞ্জুর এলাহী।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এবং বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে তার জানাজা হবে। পরে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে। ১৯৪২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্ম নেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তার বাবা স্যার সৈয়দ নাসিম আলী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স করে মঞ্জুর এলাহী পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন ঢাকায়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে তখনকার পাকিস্তান টোব্যাকো কোম্পানিতে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে নিলুফার চৌধুরীর সঙ্গে শুরু করেন সংসার জীবন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে বিদেশি একটি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন মঞ্জুর। ১৯৭৫ সালে ঢাকার হাজারিবাগের ওরিয়ন ট্যানারি নিলামে উঠলে তা কিনে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘এপেক্স ট্যানারি’।

বর্তমানে এপেক্স ট্যানারি, এপেক্স ফুটওয়্যার, এপেক্স ফার্মা, ব্লু ওশান ফুটওয়্যার, এপেক্স এন্টারপ্রাইজেস, এপেক্স ইনভেস্টমেন্ট, গ্রে অ্যাডভারটাইজিং বাংলাদেশ, কোয়ান্টাম কনজ্যুমার সলিউশনস, সানবিমস স্কুল লিমিটেড, মেগা ওশান ফুটওয়্যারসহ ১১টি কোম্পানি রয়েছে এপেক্স গ্রুপের।

১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুই দফা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন এই ব্যবসায়ী। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে তিনি ছিলেন যোগাযোগ, নৌপরিবহন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।

আর ২০০১ সালে তিনি কৃষি, নৌপরিবহন, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে বেলজিয়াম দূতাবাসের অনারারি কনসাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মঞ্জুর এলাহী। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এই সভাপতি ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক ছিলেন। বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের এই সদস্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত