সিলেটের গোলাপগঞ্জে অতিবৃষ্টিতে টিলা ধসে স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার ৭নং লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বখতিয়ারঘাট এলাকায় এ টিলাধসের ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার ভোরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন প্রথমে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়ছল মাহমুদ রিয়াদ। টিলা ধসে যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন, উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বখতিয়ারঘাট গ্রামের মৃত আসিদ আলীর ছেলে মো. রিয়াজ উদ্দিন (৫৫), তার দ্বিতীয় স্ত্রী রহিমা বেগম (৪০), মেয়ে সামিয়া (১৪) ও ছেলে আলী আব্বাস (৯)।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খলকুর রহমান জানান, স্ত্রী ও দুই শিশু নিয়ে ইয়াজ উদ্দিন ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। প্রবল বর্ষণের সময় হঠাৎ তার আধাপাকা ঘরের ওপর টিলা ধসে পড়ে। এতে তারা চারজন চাপা পড়ে মারা যান। গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, টানা বৃষ্টির ফলে টিলা ধসের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা আবার না ঘটে, সেজন্য আশপাশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার টিলাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
এদিকে সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি। রোববার সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিলেটে একদিনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৪০৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। ভারি বর্ষণের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নগরীর উপশহর, দক্ষিণ সুরমাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা তলিয়ে গেছে। এছাড়া জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন একটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।