চলতি বছরে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় ৬ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। স্থানীয় কৃষি অফিস ও কৃষকদের আশা- এবছর পাটের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। চলতি বছর কেশবপুরে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হলেও সেখানে অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে। পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৬০৩ টন। এর বাজার মূল্য ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। জানা যায়, চলতি বছর কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ছয় হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবার করা হয়েছে। সরকারি ভাবে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পাঁচ হাজার হেক্টর। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবার অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করেছে। এরমধ্যে বিএজে আর আই তুষা জাতের ছয় হাজার ৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় গুটি জাতের ২০ হেক্টর। গত বছর এ উপজেলায় পাঁচ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হলেও সেখানে আবাদ করা হয় চার হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা জানান, গত অর্থ বছরে তাদের এক হেক্টর জমিতে সার, বীজ ও কীটনাশকসহ পাট উৎপাদন খরচ হয়, প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। সেখানে প্রতি হেক্টরে পাট উৎপাদন হয় দুই দশমিক ৮০ থেকে তিন টন। যার বাজার মূল্য পাওয়া যায় দুই লাখ ৩০ হাজার থেকে দুইলাখ ৪০ হাজার টাকা। তারা আশা করছেন এ বছরও পাটের দাম ভালো পাওয়া যাবে। উপজেলার গৌরিঘোনা গ্রামের পাটচাষি মহাতাব, মঙ্গলকোট গ্রামের আরশাদ আলি, বিদ্যানন্দকাটি গ্রামের মেহের আলি জানান, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছরও তারা অতিরিক্ত জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। আবাদও ভালো হয়েছে।
এর মধ্যে মজিদপুর, ত্রিমোহিণী, সাতবাড়িয়া, মঙ্গলকোট, হাসানপুর, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। বাগদা গ্রামের কৃষক নূর ইসলাম সানা জানান, ‘গত বছর বাজারে পাটের দাম বেশি দেখে এবার প্রথম বার ৪ বিঘা ১০ কাটা জমিতে বীজ বুনেছিলাম। ভালো ফলন হওয়ায় খেতে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ পাট হতে পারে বলে আশা করছি। পাট আবাদ করতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। প্রতি মণ পাট ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করতে পারলে ভালোই লাভবান হবেন বলে জানান। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্যা আল মামুন বলেন, ‘সোনালি আশের পাট ১২০ দিনের ফসল। প্রতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে আবাদ হয়। আষাড়-শ্রাবণ মাসে পাট কাটা পড়ে। তিনি বলেন, ‘চলতি বছর কেশবপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলন ভালো পেতে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলনও বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এখানে পাটের ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।