ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

চার ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

টঙ্গীর আব্দুল্লাহপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে (২১) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। এ ঘটনায় ভিকটিমের দুলাভাই জসিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন। গতকাল রোববার দুপুরে র‌্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (অপস্ অ্যান্ড মিডিয়া) সালমান নূর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো রাফসান জানি রাহাত, রাশেদুল ইসলাম, কাওছার আহম্মেদ পলাশ ও রাকিব ইসলাম। গত শনিবার টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত মাহফুজুর রহমান বরিশাল সদর উপজেলার হায়াতসার গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বরিশালের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অনার্স (সম্মান) অর্থনীতি বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভার থেকে সেনাকল্যাণ ভবনগামী সংযোগ সড়কে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

র‌্যাব-১ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সালমান নূর আলম জানান, ছুরিকাঘাতে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কোনো ধরনের ক্লু ছাড়াই ঘটনা অনুসন্ধানে র‌্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের ২ ঘণ্টা পর ভিকটিমের অ্যান্ড্রয়েড সেট শনাক্ত করে তদন্তদল। দ্রুত সময়ের মধ্যে র‌্যাব মোবাইলের গ্রাহককে শনাক্ত করে নজরবন্দিতে আনে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, টঙ্গীর মাজার বস্তির চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভিকটিমের সেটটি ৩৫০০ টাকা দিয়ে কেনেন। একপর্যায়ে মোবাইলের গ্রাহককে সন্দেহভাজন মোবাইল চোর চক্রের ছবি দেখালে তিনি মোবাইল বিক্রেতা রাকিবকে শনাক্ত করেন। পরে র‌্যাব মোবাইল বিক্রেতাকে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে। মোবাইল বিক্রেতা রাকিব সাবেক মাদক ব্যবসায়ী এবং বর্তমানে সে ছিনতাইকারীদের ব্যবহার করে কম মূল্যে মোবাইল ফোন সংগ্রহ করে। পরে গ্রাহকদের কাছে লাভজনক মূল্যে বিক্রি করে। ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে সুইচ গিয়ারসহ অন্যান্য ধারালো সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। চোরাই মোবাইল বিক্রেতা রাকিবের কাছে একটি ছিনতাই চক্র সর্বমোট তিনটি মোবাইল সেট বিক্রি করে। তিনি আরও জানান, প্রথমে কাওছার আহম্মেদ পলাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছুরি ব্যবহারকারী ছিনতাইকারী রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাহফুজকে গুরুতর জখমের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেন। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ছিনতাইকারী এবং ছিনতাইয়ের সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলচালক রাফসান জানি রাহাতের সন্ধান দেয়। একই দিনে চালক রাহাতকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এভাবে একটি ছিনতাই চক্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী এবং একই দিনে তারা রাজধানীর হাউস বিল্ডিং এবং কুর্মিটোলা এলাকায় আরও দুটি মোবাইল ছিনতাই করে। ছিনতাই করার সময় তারা সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে। ছিনতাই করার আগে তারা মাদক সেবন করে আসে এবং চোরাই মোবাইল বিক্রেতা রাকিবের কাছ থেকে ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করে। পলাশ বিভিন্ন ভিকটিমের ব্যক্তিগত মোবাইল, মানিব্যাগ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী সংগ্রহ করে। সাগর ভিকটিমকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখায় এবং তাদের কথা না শুনলে ভিকটিমকে শরীরে আঘাত করে তার কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। তারা স্বীকার করে, দুটি স্থানে ভিকটিমের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হলে তারা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে। ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল ঘটনার প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাকিবের কাছে হস্তান্তর করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত