
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল বুধবার দিনভর এই দুই মহাসড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। মাত্র ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। দীর্ঘ যানজটের কারণে যাত্রী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের জীবনযাত্রাও ব্যাহত হয়। এই পরিস্থিতির জন্য হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রমের অভাব এবং সড়কের সংকটজনিত সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করছেন বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী ও স্থানীয়রা।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে যান চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিলো। রাত ৮ টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে আশারির চর পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে রূপগঞ্জ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার যানজট ছিলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, চিটাগাং রোডের কাউন্টারগুলোতে এখনো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যানজট ও বাস সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, হাইওয়ে পুলিশের পর্যাপ্ত উপস্থিতি নেই। ফলে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা থেকে আমরা এই সড়কে আটকা। মাত্র ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে বিকেল ৩টা হয়ে গেছে। হাইওয়ে পুলিশ কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করছে না।
আফরোজা নামে এক যাত্রী বলেন, বেলা ১১টার দিকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে গাড়ি ছেড়েছে, এখন ৩টা বাজে, আমি কাঁচপুর পার হতে পারিনি। সড়কে ছোট ছোট গাড়ি, ট্রাক সব একত্র হয়ে বিশাল যানজট তৈরি করেছে। কেউ নেই যিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবেন।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, আজকের যানজট মূলত দুর্গাপূজার ছুটিতে গ্রামে যাওয়া মানুষের ঢল এবং কিছু খারাপ সড়কের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও ছুটির কারণে মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি গাড়ির চাপ বেড়েছে। এতে যানবাহনের গতি কমে গিয়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। এখন যানবাহন চলাচল করছে। ধীরে ধীরে যানজট স্বাভাবিক হয়েছে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ টিআই জুলহাস উদ্দিন জানান, সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দিসহ দুটি স্থানে গাড়ি বিকল হওয়ায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। এ যানজট মূলত সাইনবোর্ড থেকে টোলপ্লাজা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। ভোরেও কিছুটা যানজট ছিল, তবে সকাল ১০টার সময় তীব্র যানজট ছিল। যানজটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি মারাত্মক। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এটি আরও কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। অনেক যাত্রী জানান, খাবার ও পানি শেষ হয়ে গিয়েছিলো। চট্টগ্রামগামী বাসের যাত্রী সেলিম আহমেদ বলেন, আমরা বাসে বসে প্রায় ৫ ঘণ্টা পার করে দিয়েছি। খাওয়ার জন্য কিছু নেই। হাইওয়ে পুলিশ কোথায় ছিল, কেউ জানে না।