
সিরাজগঞ্জে এবার আগাম শীতকালীন বিভিন্ন সবজি বাগান চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ নতুন সবজি হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এরইমধ্যে এ চাষাবাদে সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে অনেক কৃষক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আগাম শীতকালিন সবজি চাষাবাদে ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। সবচেয়ে বেশি এ চাষাবাদ হয়েছে কাজিপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। যমুনা নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলেও লাভজনক এ চাষাবাদ করা হয়েছে। এসব আগাম শীতকালিন সবজির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে, লাউ, কুমড়া, পালংশাক, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাটা, সিম, বেগুন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো প্রায় ২ মাস আগে এসব সবজি চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। এরইমধ্যে এসব সবজি হাট বাজারে উঠতে শুরু করেছে। নতুন সবজি হওয়ায় গ্রাহকের চাহিদাও বাড়ছে এবং দামও ভালো থাকায় কৃষকেরা খুশি।
স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, খরচ কম লাভ বেশি এ শীতকালিন সবজি চাষাবাদে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারও এসব সবজি বেশি চাষাবাদ করা হয়েছে। তবে চরাঞ্চলের বিভিন্ন সবজি কিছুটা আগেই হাট-বাজারে উঠেছে। এরমধ্যে লাউ, মুলা ও কপির কদর বেশি রয়েছে। এদিকে উল্লাপাড়া উপজেলার বেতকান্দি ফকিরপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক রূপচাঁদ আলী (৫৯) তার ২৫ শতাংশ নিজ জমিতে শীতকালীন আগাম লাউ বাগান চাষাবাদ করেছেন। এ বাগান করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং এ বাগান থেকে লাউ উৎপাদনও শুরু হয়েছে। এ সবুজ বর্ণের লাউ হাট বাজারে প্রতি লাউ ৪০/৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এরআগে প্রতিটি লাউ ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকাও বিক্রি করছেন তিনি। এরইমধ্যে প্রায় ৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন এবং আরও ২/৩ মাস লাউ উৎপাদন হবে এ বাগানে। এ বাগান থেকে প্রায় ৩ গুণ লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি। প্রতিদিন পড়ন্ত বিকালে তার লাউ বাগান দেখার জন্য এলাকার মানুষ ভীড় জমায় এবং এ বাগান দেখে অনেক কৃষকই লাউ বাগান চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক একেএম মঞ্জুরে মওলা আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আগাম শীতকালিন বিভিন্ন সবজি চাষাবাদে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ। বিশেষ করে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকেও পরামর্শ দিয়েছেন। এবার এ চাষাবাদ বাম্পার ফলন হয়েছে এবং অতিবর্ষনে এ সবজি বাগানে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তবে বাজার ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।