
চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পাঁচ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ তিনজন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক (বিলুপ্ত কমিটি) গোলাম আকবরের অনুসারী। বাকি দুজন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী।
গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ, বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল, বাগোয়ান ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি রবিউল হোসেন ও স্থানীয় বিএনপির কর্মী মোহাম্মদ সোহেল।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর ওই গ্রামের বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হননি।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান দাবি করেন, এ ঘটনায় তাদেরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। জানতে চাইলে রাউজান রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এলাকায় বিএনপির রাজনীতির দুই পক্ষ আলাদা অবস্থানে থাকলেও গোলাগুলির ঘটনাটি এলাকার আধিপাত্য নিয়ে হতে পারে। ঘটনায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি।
রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেই চলেছে। গত এক বছরে এই উপজেলায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। কখনও প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে, কখনো ছুরিকাঘাত বা পিটিয়ে এসব খুন করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অস্ত্রধারী কিংবা মূল আসামিরা ধরা পড়েনি। এমনকি ঘটনায় ব্যবহৃত কোনো অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি। গত বছরের ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় এ উপজেলায় মোট ১৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর যুবদলের কর্মী মুহাম্মদ আলমগীর আলমকে গুলি করে খুন করা হয়। এর আগে ৭ অক্টোবর খুন হন বিএনপির কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২)। রাউজানের খামারবাড়ি থেকে ফেরার পথে হাটহাজারীর মদুনাঘাটে চলন্ত গাড়িতে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। এ ঘটনায়ও অস্ত্রধারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।