ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

সর্জন পদ্ধতির আগাম শিমে লাভবান কৃষক

সর্জন পদ্ধতির আগাম শিমে লাভবান কৃষক

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় সর্জন পদ্ধতিতে আগাম জাতের শীম চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক। ফলে ধীরে ধীরে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সর্জন পদ্ধতিতে আগাম জাতের শিম চাষ। উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এ অঞ্চলে বর্ষা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক সময় জমিতে দীর্ঘদিন পানি আটকে থাকে। ফলে মৌসুমি চাষ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সর্জন পদ্ধতি ( উঁচু বেড বা উঁচু কূপ তৈরি করে সবজি উৎপাদন) পদ্ধতিটি কৃষকদের কাছে যেন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। বিশেষ করে আগাম জাতের শিম চাষে এ পদ্ধতি এখন লাভজনক এক চাষাবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা যায়, এবার কৃষকরা প্রচলিত চাষ পদ্ধতির তুলনায় সর্জন পদ্ধতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ, এই পদ্ধতিতে পানি নিষ্কাশন সহজ, মাটির উর্বরতা ধরে রাখা সম্ভব, পাশাপাশি গাছের শিকড়ও ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। ফলে গাছ দ্রুত বড় হয় এবং আগাম সময়ে ফলন পাওয়া যায়। বাজারে আগাম শিমের চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি হওয়ায় কৃষকরা বলছেন, এ পদ্ধতিতে বিনিয়োগের বিপরীতে লাভও তুলনামূলক বেশি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার আসলামপুর, ওমরপুর, চর মাদ্রাজ, আমিনাবাদ, এওয়াজপুর, জিন্নাগড়, হাজারীঞ্জ ইউনিয়নে কৃষকরা রূপবান জাতের আগাম শিম চাষাবাদ করছেন। এই বছরে শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৫ হেক্টর জমি। কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪২৫ হেক্টর জমিতে শীম চাষাবাদ করেছেন। এবং ৮ শত কৃষক আগাম শিম চাষাবাদের যুক্ত রয়েছেন।

কৃষকরা বলছেন, এই বছরে আবহাওয়া ও ফলন ভালো হলে লাভবান হবেন তারা। শীতের শুরুতে কৃষকরা প্রতি কেজি শিম ১৫০ টাকা করে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে শিম বিক্রি করছেন।

কৃষক আবু তাহের বলেন, এক সময়ে সর্জন পদ্ধতি ছাড়া সবজি চাষাবাদ করেছিলাম, কখনও লোকসান, কখনও লাভবান হয়েছি। তবে এখন পুরো বছরেই সর্জন পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষাবাদ করছি। এ বছরেই আমি ২৪০ শতাংশ জমিতে রূপবান জাতের আগাম শিম চাষ করছি। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রায় ১০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারব।

কৃষক ইউছুফ বলেন, ‘দুই মাস আগে সর্জন পদ্ধতিতে শিম চাষ শুরু করেছি। আগাম তোলায় ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। আমি চলতি মৌসুমে ২ একর ৫০ শতাংশ জমিতে শিমের আবাদ করছি। আবহাওয়া ও ফলন ভালো হলে শেষ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা শিম বিক্রি করতে পারবো। তবে সর্জন পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদনের কারণে তেমন ঝুঁকি থাকে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা বলেন, ‘দ্বীপ জেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলাটি সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। সর্জন পদ্ধতিতে বছর ব্যাপি প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করছে কৃষকরা। তবে শীতকালীন সবজির মধ্যে কৃষকরা রুপবান জাতের আগাম শিম চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কৃষকদের কাছে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত