
আপনার ফোন বা ল্যাপটপ কি আগের মতো দ্রুত কাজ করছে না? অনেক সময় আমরা বুঝতেই পারি না, ডিভাইস ধীরে চলার মূল কারণটা খুব সাধারণ একটি অভ্যাসের অভাব। নিয়মিত রিস্টার্ট না করা হলে ফোন ও ল্যাপটপের গতি কমে যায়, ব্যাটারি দ্রুত শেষ হতে থাকে এবং নিরাপত্তার ঝুঁকিও বাড়তে পারে। আজকের ডিজিটাল জীবনে সারাদিন ফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহার করাই আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অনেকেই সপ্তাহের পর সপ্তাহ ডিভাইস বন্ধ করেন না। এর ফলে ধীরে ধীরে সিস্টেমের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বিভিন্ন অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে, অপ্রয়োজনীয় প্রসেস জমতে থাকে এবং এক সময় ডিভাইসের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়ে।
এই কারণেই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ফোন ও ল্যাপটপ রিস্টার্ট করার পরামর্শ দেন। রিস্টার্ট করা ডিভাইসের জন্য যেন নতুন করে শ্বাস নেওয়ার মতো কাজ করে। এতে সিস্টেম আবার পরিষ্কারভাবে কাজ শুরু করতে পারে এবং গতি ফিরে আসে।
দীর্ঘ সময় ধরে ফোন বা ল্যাপটপ চালু থাকলে র্যামে অস্থায়ী ফাইল জমা হয়। অনেক অ্যাপ ও প্রসেস একসঙ্গে চলতে থাকে, যা সিস্টেমের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলেই ডিভাইস ধীর হয়ে যায়, অ্যাপ হঠাৎ বন্ধ হতে শুরু করে এবং ব্যাটারি দ্রুত খরচ হয়।
রিস্টার্ট করার মাধ্যমে এই অপ্রয়োজনীয় ফাইল ও ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস বন্ধ হয়ে যায়। র্যাম খালি হয় এবং ডিভাইসটি নতুনভাবে কাজ শুরু করতে পারে। এতে ফোন ও ল্যাপটপের গতি বাড়ে, ব্যাটারির পারফরম্যান্স উন্নত হয় এবং সফটওয়্যার আপডেট ও সিকিউরিটি প্যাচগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
ফোন রিস্টার্ট করা খুবই সহজ, তবে সঠিকভাবে করা জরুরি। কয়েক সেকেন্ড পাওয়ার বাটন চেপে ধরে রাখলে স্ক্রিনে রিস্টার্ট অপশন দেখা যায়। সেটি নির্বাচন করলেই ফোন রিস্টার্ট হবে। যদি রিস্টার্ট অপশন না থাকে, তাহলে ফোনটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে আবার চালু করা যেতে পারে। সাধারণভাবে সপ্তাহে একবার বা দুবার ফোন রিস্টার্ট করলেই যথেষ্ট।
ল্যাপটপের ক্ষেত্রেও রিস্টার্ট করা সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, শুধু ল্যাপটপের ঢাকনা বন্ধ করা বা স্ক্রিন লক করাই যথেষ্ট। আসলে এটি কেবল স্লিপ মোড, রিস্টার্ট নয়। এতে সিস্টেম পুরোপুরি রিফ্রেশ হয় না।
উইন্ডোজ ল্যাপটপে স্টার্ট মেনু খুলে পাওয়ার অপশনে গিয়ে রিস্টার্ট নির্বাচন করতে হবে। ম্যাকবুকে উপরের বাম পাশে থাকা অ্যাপল মেনুতে ক্লিক করে রিস্টার্ট অপশন বেছে নিতে হবে। রিস্টার্ট করার আগে অবশ্যই সব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সেভ করে নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোন সপ্তাহে অন্তত একবার রিস্টার্ট করা উচিত। আর ল্যাপটপ প্রতি ৩-৪ দিন অন্তর একবার রিস্টার্ট করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই ছোট্ট অভ্যাস ফোন ও ল্যাপটপকে দ্রুত, নিরাপদ এবং দীর্ঘদিন ভালো অবস্থায় রাখতে সাহায্য করে। রিস্টার্ট করা কোনো কঠিন কাজ নয়, কিন্তু এর সুফল অনেক বড়। নিয়মিত রিস্টার্টের মাধ্যমে ডিভাইসকে সবসময় সতেজ ও মসৃণভাবে চলতে দেওয়া সম্ভব।