ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রাজশাহীতে শীত বাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি

রাজশাহীতে শীত বাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি

শীতের তীব্রতা বাড়ায় রাজশাহীতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীদের মধ্যে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়স্করাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়ায় ভুগছেন। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে- রাজশাহীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে, ফলে শীত আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। বহির্বিভাগে অন্য রোগীর সংখ্যা কমলেও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেড়েছে। প্রতিদিন ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ রোগী ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, যার মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি।

গত দুই দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১২ জন। গত সোমবার ৫৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হন- এর মধ্যে ৩৪ জন বয়স্ক এবং ২৩ জন শিশু। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ভর্তি হওয়া ৫৫ জনের মধ্যে ২৫ জন শিশু এবং ৩০ জন বয়স্ক রোগী। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার সংক্রমণ তুলনামূলক বেশি দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী রোগীরাও এসব সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। আক্রান্তদের অনেকেই ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শিশু সম্রাটের বাবা রাজীব জানান, এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিল তার সন্তান। জ্বর ও কাশি নিয়ে তাকে হাসপাতালে আনতে হয়। জ্বর কমে গেলেও কাশি রয়ে গেছে, তবে আগের তুলনায় সে ভালো আছে। দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাবেন বলে আশা করছেন তারা।

আরেক রোগীর অভিভাবক সাজন বলেন, ঠান্ডা লাগার কারণে তার মেয়ের সর্দি-জ্বর হয়। সঙ্গে ডায়রিয়া ছিল, যা এখন ভালো হয়েছে। জ্বর, সর্দি ও কাশির জন্য ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক তাদের নির্দেশ দিয়েছেন- কোনভাবেই শিশুকে ঠান্ডা না লাগতে দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচতে গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে এবং যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। শিশুদের ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহের সময় শিশুদের ঘরের বাইরে কম বের করার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি ঘরে ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে না পারে, সেদিকেও অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলেন।

রাজশাহী জেলার তাপমাত্রা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাজীব খান বলেন, রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে। একদিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে ০.৬ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে ১.৮ ডিগ্রি।গত বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৪ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪ ডিসেম্বর সকালে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, তাপমাত্রা কমলে শীতের অনুভূতিও বাড়বে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত