শেয়ারবাজারে লুটতরাজ চলছে এমন অভিযোগ তুলে কাল সোমবার মতিঝিলে প্রতিবাদ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)। শেয়াবাজারের বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষার এই মহাসমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল শনিবার সিএমজেএফ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশের সব বিনিয়োকারীকে মহাসমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বা জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র মো. নূরুল ইসলাম মানিক, সিনিয়র মুখপাত্র এসএম ইকবাল হোসেন এবং মুখপাত্র মো. ফরিদ আহমেদ।
মহাসমাবেশে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, সোমবার দুপুর ২টায় ঢাকার মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে প্রতিবাদ মহাসমাবেশ হবে। এতে অংশ নেবেন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ, শেয়ারবাজার বিশ্লেষক মো. ফজলুল বারী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা মো. দিদারুল আলম ভূঁইয়া। সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৯৯ শতাংশ বিনিয়োগকরী ক্ষতিগ্রস্ত। এসব বিনিয়োগকারীর পুঁজি রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান নেতৃত্ব কোনো ভূমিকা রাখছে না। বরং তারা যেন শেয়ারবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তিন বলেন, সোমবার আমরা মহাসমাবেশ করবো। এই সমাবেশে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা যাতে অংশ না নেয়, তার হুমকি দিয়ে বিএসইসি থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সিনিয়র মুখপাত্র এসএম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরিয়ে আনার জন্য যা করার, যেখানে যাওয়ার- আমরা তাই করবো।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে লুটতরাজ চলছে। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সবকিছু মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নতুন আশা জাগে। বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগের আমলে যে লুটতারাজ হয়েছে, সবকিছু পুষিয়ে আমরা লাভের দিকে যাবো। বিরাট পরিবর্তন হবে, এটাই আশা ছিল। সেটাই হচ্ছিল। তিন দিন বাজার ভালো ছিল।
কিন্তু তারপর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন লোকদের দায়িত্ব দেয়া হলো যারা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস থেকে আরো ধ্বংস করছেন। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা হয়েছে, গত ৫ মাসে তার থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ মাসে ৬৬ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।
এর জবাব কে দেবে? এসএম ইকবাল হোসেন বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি মহাসমাবেশ করার পর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবো। এর আগে আমরা কোনো স্মারকলিপি দেইনি। তবে বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। বরং তিনি আমাদের চিঠি বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে ফরোয়ার্ড করে দেন।