চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে চলতি মৌসুমে আমের মুকুল পরিপক্ক হওয়ার সময় তীব্র দাবদাহ ও সেচের ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। এতে করে জেলার কৃষি অর্থনীতির অন্যতম খাত আম চাষে এ বছর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। তবে আশার কথা হচ্ছে প্রতিবছর জেলায় আবাদ বাড়ছে বিদেশী প্রজাতির বিভিন্ন আমের। বাগানীরা বলছেন প্রয়োজনীয় পৃষ্টপোষকতা ও সুযোগ পেলে খাগড়াছড়ির আম বিদেশে রপ্তানীযোগ্য পণ্যের স্বীকৃতি পেতে পারে। খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৫ মৌসুমে খাগড়াছড়ির উপজেলায় ৪ হাজার ৪২১ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এক বছর আগেও যেটি ছিল ৪ হাজার ১৩০ হেক্টর। আমের আবাদ বাড়লেও চলতি মৌসুমে ফলন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কিত কৃষি বিভাগ ও বাগানীরা। ২০২৫ মৌসুমে আমের ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪ হাজার ১৮০ মে. টন। এ দিকে প্রতিবছর কৃষি পঞ্জিকা অনুসারে আমের ফলন ছেঁড়ার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও এ বছর তা নির্ধারণ করা হয়নি। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের কাছে স্পষ্ট কোনো উত্তর নেই। এরইমধ্যে অনেক বাগানি নিজেদের মতো করে আম বাজারজাত করছেন। খাগড়াছড়ির আলুটিলা এলাকার বাগান মালিক রিপন চাকমা বলেন, এ বছর আবহাওয়ার কারণে বাগানীরা খুব অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। অতিরিক্ত ব্যয় করে সঠিক নিয়মে পানি সেচ দেয়ার পর আমের আকার গত বছরের তুলনায় ছোট হয়েছে। প্রতিবছর সবার আগে আলুটিলা এলাকার বাগানে আম পাকা শুরু হতো এ বছর এখনও তা দেখা যাচ্ছে না। আশা করছি মে মাসের শেষ দিকে আম বাজারজাত করা সম্ভব হবে। কমলছড়ি এলাকার মংসাথোয়াই মারমা বলেন, আম্রপালি আমের পাশাপাশি মিয়াজাকি, কিউজাই, বারি জাতের আমসহ ১০-১২ প্রজাতির বিদেশি আমের চাষ করেছি। শুরুর দিকে পরীক্ষামূলক হলেও কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করছি। এ বছর ফলন কিছুটা কম হয়েছে। স্থানীয় বাজারের চেয়ে বাইরে বিক্রি করলে লাভ একটু বেশি পাওয়া যায়। তবে পরিবহনে কুরিয়ার সার্ভিসের বাড়তি চার্জ ও বাজারফান্ড এবং পৌরসভার বেপরোয়া টোলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। আশা করছি এবার এ সমস্যা থেকে উত্তরণে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাছিরুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের আধুনিক আম চাষ পদ্ধতি, রোগবালাই প্রতিরোধ ও সার এবং সেচ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেসব চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসরণ করেছে তারা কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন বলে আশা করি।