ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

ছয় মাসে নারী কর্মী কমেছে ২ হাজার

ছয় মাসে নারী কর্মী কমেছে ২ হাজার

দেশের আর্থিক খাতে নারী কর্মী আরও কমে গেছে। গত ছয় মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ২ হাজার বা ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্প্রতি প্রকাশিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জেন্ডার সমতাবিষয়ক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বরে সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৬৪৯ জন। চলতি বছরের প্রথমার্ধ (জানুয়ারি-জুন) শেষে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭৮২ জনে। সেই হিসাবে ছয় মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে নারী কর্মী কমেছে প্রায় দুই হাজার বা প্রায় ৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংকগুলোতে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, যাতায়াত সুবিধা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মতো গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর আগের ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে অবনতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে অফিস সময়ের পর নারীদের যাতায়াত সুবিধার।

গত বছরের শেষ ছয় মাসে ব্যাংকগুলোতে ৫২ শতাংশ নারী এই সুবিধা পেতেন। গত ছয় মাসে তা কমে ৩৭ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি, যার মধ্যে নারী কর্মী ১৭ শতাংশ। বাকি ৮৩ শতাংশ পুরুষ কর্মী। এ ছাড়া গত জুন শেষে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট কর্মীর ১৭ শতাংশ ছিল নারী। অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রতি পাঁচজন পুরুষ কর্মীর বিপরীতে নারী কর্মী প্রায় একজন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী কর্মীদের মধ্যে প্রারম্ভিক ও মধ্যবর্তী পর্যায়ে নারীদের অবস্থান বেশি। উচ্চ পদে কর্মরত নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় অনেক কম। ব্যাংক খাতে নারী কর্মী কমে যাওয়া ও নারীদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি একটি ব্যাংকের প্রারম্ভিক পর্যায়ের এক নারী কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছয় মাসের ছুটিকে কর্মমূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। কাজের মূল্যায়ন, ডে কেয়ার ও যাতায়াত সুবিধায় নারীদের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বৈষম্য রয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার পর নারী কর্মীদের অফিস ছাড়তে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও তা বেশির ভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মানে না। গত পাঁচ বছরে সন্তান পরিপালনের অসুবিধার কারণে আমার পরিচিত বিভিন্ন ব্যাংকের সাতজন নারী কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে দেখেছি। এ ছাড়া ক্রেডিট বিভাগেও নারীদের অন্তর্ভুক্তি কম। এসব ঘটনা বেশির ভাগ ব্যাংকে নারী কর্মীদের জন্য অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত