ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমাতে যৌথ উদ্যোগ চান গভর্নর

রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমাতে যৌথ উদ্যোগ চান গভর্নর

সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসীদের আয় পাঠানোর খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এই খরচ কমাতে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে সৌদি আরব-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৫ অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান আহসান এইচ মনসুর। সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই) এই সামিটের আয়োজন করে। ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে। কিন্তু অর্থ পাঠানোর খরচ এখনও অনেক বেশি, ৬ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। এই খরচ কমাতে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এতে প্রবাসী শ্রমিকরা উপকৃত হবেন এবং উভয় দেশের অর্থনীতিও লাভবান হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে গভর্নর বলেন, গত ৩০ বছরে কখনো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়নি। বৈশ্বিক মন্দা, কোভিড কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা সব ধরনের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয়েছে দেশটি। এটি একটি স্থিতিশীল ও টেকসই অর্থনীতি। এখনো দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সীমিত এবং ঐতিহ্যনির্ভর। বাংলাদেশ মূলত সৌদি আরব থেকে জ্বালানি আমদানি করে ও শ্রমশক্তি পাঠায়। কিন্তু আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে, শিল্প, অবকাঠামো, প্রযুক্তি ও কৃষি খাতে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবের সরকারি ও বেসরকারি খাতের হাতে বিপুল অর্থনৈতিক সম্পদ রয়েছে। এখনই সময় বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি সরাসরি বিনিয়োগ বাড়ানোর। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। সৌদি আরবের প্রয়োজন দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমশক্তি, আর বাংলাদেশ সেই চাহিদা পূরণে বহু বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে শক্তি, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে যা সৌদি আরবের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব। গভর্নর বলেন, সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) মূলত দেশের ভেতরে ও বাইরে বিনিয়োগের জন্য গঠিত।

ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ তহবিল বিনিয়োগ করেছে, কিন্তু এখনো বাংলাদেশে করেনি। আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে সৌদি সরকারি ও বেসরকারি তহবিলগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার। সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়কাল থেকে শুরু। বলতে গেলে, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনিই প্রথম উদ্যোগ নেন সরকারি পর্যায়ে প্রবাসী শ্রমিক পাঠানোর চুক্তি স্বাক্ষরের, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক পাঠানো আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এর আগে কিছু মানুষ বেসরকারি উদ্যোগে যেতেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের সময়ই তা সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) ব্যবস্থায় রূপ পায়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এজন্য আমি সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত