গেল বছরের ডিসেম্বরে ক্যারিবিয় দ্বীপে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সুপার লিগে ভিন্ন এক চেহারায় দেখা মিলেছিল সৌম্য সরকারের। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে রংপুর রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন হতে সহায়তা করেছে। ফাইনালে ম্যাচ সেরার পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতেছেন এ ব্যাটার। তারপরই দেশের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেন তিনি। তবে চোটে পড়েন সৌম্য। ফিল্ডিং করার সময় ডান তর্জনি কেটে যায় তার। লাগে পাঁচটি সেলাই। সে চোটে চলমান বিপিএলে মাঠে নামতে পারেননি এ ব্যাটার। তবে চোট থেকে এখন অনেকটাই মুক্ত তিনি। মাঠের লড়াইয়ে নামতে এরইমধ্যে রংপুর রাইডার্সের তাঁবুতে যোগ দিয়েছেন। দলের সঙ্গে আছেন, নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন সৌম্য। গত শুক্রবার চট্টগ্রামে ম্যাচের আগে মাঠে রংপুর রাইডার্সের দলীয় বৃত্তেও তাকে দেখা গেল। কিন্তু একাদশে তার নাম নেই। নেটে ফিরলেও ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় নেই তিনি। ফিরতে যদিও মুখিয়ে আছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, তবে মরিয়া নন একদমই। তাড়াহুড়া করে নিজের বিপদ ডেকে আনতে চান না।
রংপুর রাইডার্সের বিপিএল পরিকল্পনায় এবার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাজুড়ে ছিলেন সৌম্য। বিপিএলের আগে গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে রংপুরের শিরোপা জয়ে তার ছিল বড় অবদান। ওই আসরে তিনি ছিলেন ম্যান অব দ্য ফাইনাল ও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট। পরে বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও রানের দেখা পান তিনি। সেই ক্রিকেটার বিপিএলে একটি ম্যাচও খেলতে পারছেন না চোটের কারণে। কবে খেলতে পারবেন, সুনির্দিষ্ট করে জানা নেই তার কিং বা কারো। তবে বেশ কয়েক দিন জিমে ও মাঠে ফিটনেস নিয়ে কসরত করে এখন ব্যাট হাতে নিতে পারছেন, দলে যোগ দিয়ে নেট সেশন করতে পারছেন, এতেও খুঁজে পাচ্ছেন প্রাপ্তি। বিপিএলে রংপুরের ম্যাচের ফাঁকে টি-স্পোর্টসকে তিনি জানালেন সেই ভালো লাগার কথা। ‘সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে মাঠে আসতে পেরেছি। মাঠে এসে অনুশীলন করেছি, এটা খুবই ভালো। আজকে দ্বিতীয়-তৃতীয় দিন ব্যাটিং করলাম। আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। যেহেতু আমরা ক্রিকেটার, সবসময়ই ভালো লাগে মাঠে আসতে, কাজ করতে।’
সতীর্থরা যখন মাঠ মাতাচ্ছেন ব্যাটে-বলে, তার দল টুর্নামেন্টে ছুটে চলেছে অপ্রতিরোধ্য জয়রথে, বাইরে থেকে দেখতে খুব ভালো লাগার কথা নয় সৌম্যর। তবে অতি তাড়ায় বিপদ বাড়ানোর ইচ্ছেও তার নেই। ‘চেষ্টা করছি (দ্রুত মাঠে ফিরতে)। তবে এখানে জোরাজুরি করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ব্যাটিং করছি এখন, কিন্তু ফিল্ডিংয়ের কোনো কিছু এখনো ওইভাবে করা হয়নি। আস্তে আস্তে যেতে হবে, যেগুলো প্রক্রিয়া আছে, সেসবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ফিজিও, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ওনারা ভালো বলতে পারবেন। আমি (ব্যাটিং) শেষ করে আমার ফিডব্যাক ফিজিওকে বলেছি। উনি আবার বাড়তি কিছু কাজ দিয়েছেন। এরকমভাবেই চলছে, চেষ্টা যত দ্রুত সম্ভব ফিরতে।’ ‘পুরোপুরি না সারলে বরং বেশি ঝুঁকি। যদি তাড়াহুড়ো করে নেমে যাই এবং আবার সেখানে লাগে, তাহলে এক মাসের জায়গায় দুই মাস লেগে যেতে পারে (ফিরতে)। আমি, চিকিৎসক, রংপুর রাইডার্স, সব পক্ষ মিলে কথা বলেই ঠিক করতে হবে।’ চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা সৌম্যর আগেও হয়েছে। তবে এবার শরীরের এই চোটে তার মনের চোট একটু বেশিই লাগার কথা। বেশ ভালো ফর্মে যে ছিলেন! চোটের পর সেই ছন্দ ধরে রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে সবসময়ই। সৌম্য যদিও আশার ভেলার যাত্রী। ‘চেষ্টা করব যেখানে শেষ করেছি, সেখান থেকেই শুরু করার। যদিও কাজটা কঠিন, যেহেতু চোটে ছিলাম, আবার কাজ করে ফিরতে হবে। তবে চেষ্টা করব যে ফর্মে ছিলাম, ওখান থেকে আবার শুরু করতে।’