এক যুগেরও বেশি সময় আগে একটা অপরিকল্পিত ভিশন ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। সেটি ছিল দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তৎকালীন সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের চটকদার বিজ্ঞাপন। যার কোনো লক্ষ্যই ছিল না, ছিল না কোনো সুপরিকল্পনাও।
গত বছর জুলাই আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের অনেক কিছুই বদলে গেছে। ফুটবলে কাজী সালাউদ্দিন যুগেরও অবসান হয়েছে। তারপর থেকেই আস্তে আস্তে জেগে উঠছে দেশের ফুটবল। জামাল ভূঁইয়ারা সালাউদ্দিনের বিশ্বকাপ স্বপ্নপূরণ তো দুরের কথা, এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বও উৎরাতে পারেনি। তবে তাবিথ আউয়ালের ফেডারেশন ভিশন ছাড়াই একটি স্বপ্নপূরণ করে আরেকটির পূরণের স্বপ্ন দেখছে।
দেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মেয়েদের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে গেছেন আফঈদা খন্দকার, রুপনা চাকমারা। একইসঙ্গে তাদেরকে হাতছানি দিচ্ছে বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে খেলার স্বপ্নও। ১৯৭৫ সালে শুরু হওয়া এশিয়ান কাপে এবারই প্রথম মূলপর্বে খেলবে বাংলাদেশ।
আগামী বছরের ১ মার্চ থেকে ২১ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার তিনটি শহরের পাঁচটি ভেন্যুতে হবে নারী এশিয়ান কাপ। সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্টার্ন সিডনি স্টেডিয়াম, গোল্ড কোস্টের গোল্ড কোস্ট স্টেডিয়াম, পার্থের রেকটাঙ্গুলার স্টেডিয়াম ও পার্থ স্টেডিয়ামে হবে ১২ দলের লড়াই। ফরম্যাট অনুযায়ী স্বাগতিক হিসাবে অস্ট্রেলিয়া সরাসরি মূলপর্বে খেলবে।
২০২২ সালে সর্বশেষ নারী এশিয়ান কাপের ফলেরভিত্তিতে সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছে আরও তিনটি দেশ। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীন, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয় হওয়া জাপান সরাসরি খেলবে। বাছাইপর্ব পেরিয়ে সুযোগ পাবে আট গ্রুপের আট চ্যাম্পিয়নরা। ২০২৬ এশিয়ান কাপে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথম দল হিসেবে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ১২ দলেকে কার সঙ্গে খেলবে তা এখনও ঠিক হয়নি।
২৯ জুলাই সিডনি টাউন হলের ড্রতে নির্ধারণ হবে। ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপে বাংলাদেশসহ অন্য দেশের জন্য বাড়তি পাওয়া হিসেবে থাকছে ২০২৭ নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্বও। মেয়েদের বিশ্বকাপ হবে ব্রাজিলে। এশিয়া থেকে সরাসরি ৬টি দল ও আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে সুযোগ পেতে পারে আরও দুটি দল। সেমিফাইনাল ওঠা চার দল সরাসরি সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া চার দলের সামনেও থাকবে সুযোগ। চার দল দুটি প্লে-ইন ম্যাচে মুখোমুখি হবে। জয়ী দুই দল পেয়ে যাবে বিশ্বকাপের টিকিট। হেরে যাওয়া দুই দল যাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে। শুধু বিশ্বকাপ নয়, রয়েছে অলিম্পিকের হাতছানিও।
২০২৬ নারী এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা আটটি দল খেলার সুযোগ পাবে ২০২৮ অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইপর্ব। সেই বাছাইপর্বে দুই গ্রুপে দলগুলো বিভক্ত হয়ে খেলবে। দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের নারী ফুটবলে সুযোগ পাবে।