জাতীয় দলের সাবেক কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফকে নতুন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এমন গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সংস্থাটির সভাপতি তাবিথ আউয়াল। পাশাপাশি তিনি জানালেন শিগগিরই দক্ষ কারিগরি জনবল নিয়োগ দিতে আগ্রহী বাফুফে। আটটি গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি (টেকনিক্যাল) পদের জন্য আবেদন আহ্বান করবে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। সম্প্রতি বেসরকারি চ্যানেল টি স্পোর্টসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ডাচ কোচ ডি ক্রুইফ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদে যোগ দিতে যাচ্ছে বাফুফে এবং তার সাবেক সহকারী রেনে কস্টারকে যুব দলের উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বাফুফের বর্তমান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটুর দায়িত্ব চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, টিটুকে হয়তো ফেডারেশনের ভেতরে অন্য কোনো দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে তাবিথ আউয়াল জানিয়েছেন, ‘এই পদগুলোর বিষয়ে এখনও কারও সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। মিডিয়ায় যা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়।’ এ বছর সিনিয়র দলের একাধিক আন্তর্জাতিক মিশনের পাশাপাশি যুব দলগুলোর জন্য রয়েছে ৩টি বড় প্রতিযোগিতা। সেপ্টেম্বরে অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ বাছাই, অক্টোবরে অনূর্ধ্ব-১৭ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং নভেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ বাছাই। এসব টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে দক্ষ কারিগরি জনবল নিয়োগে আগ্রহী বাফুফে।
টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান কামরুল হাসান হিলটন জানিয়েছেন, নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। এতে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, সহকারী টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, গোলকিপিং কোচ, সহকারী কোচসহ আটটি পদের জন্য লোক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। আটটি পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুত করা হচ্ছে জানিয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমরা আগ্রহীদের জীবনবৃত্তান্ত (ঈঠ) গ্রহণ করবো, এরপর ইন্টারভিউ নেব এবং তারপর বাজেট অনুমোদনের মাধ্যমে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এই পদের বেশিরভাগই সাধারণত কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আগে অস্থায়ী ভিত্তিতে দেওয়া হয়ে থাকে। জাতীয় দলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ছাড়া, বাকি সহকারী কোচ হাসান আল মামুন ও ডেভিড গোমেজ, গোলকিপিং কোচ মিগেল ইগলেসিয়াস সবাই অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত আছেন। কাবরেরার মেয়াদ ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এছাড়া হিলটনও জানিয়েছেন, ডি ক্রুইফ বা অন্য কারো সঙ্গে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু যোগাযোগ হয়ে থাকলে, তা পুরোপুরি অস্বীকারও করেননি।
২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধান কোচ ছিলেন ডি ক্রুইফ। দখলভিত্তিক আক্রমণাত্মক ফুটবলের পরিচয় এনে দিলেও, তার অধীনে ১৭ ম্যাচে মাত্র ৩টি জয় এসেছিল, বাকি ৭টিতে হার। তবে সেই সময়েই আবিষ্কৃত হয় হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের মতো প্রতিভা, যিনি পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডসে ক্লাব ট্রায়ালে যাওয়ার সুযোগ পান। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ছাড়ার পর আর কোনো কোচিংয়ের চাকরি পাননি ডি ক্রুইফ। অন্যদিকে রেনে কস্টার পরে নানা ক্লাবে যুক্ত থাকলেও, বাংলাদেশ থেকে অপমানজনকভাবে বিদায়ের পর তিনি ফিফার শরণাপন্ন হন এবং ৮০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণের রায় পান।