স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা এখন এশিয়ান কাপে। ঋতুপর্ণা চাকমার অসাধারণ দুই গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে প্রথমবার ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপের টিকিট পেয়েছে পিটার বাটলারের দল। তাতে বেড়েছে স্বপ্নের পরিধি। মেয়েদের এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে খেলে নিজেদের উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা প্রায়ই তুলে ধরেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার জেমস বাটলার। বাছাইয়ের আগে ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে ড্রয়ের ফলও তিনি পেয়েছেন মিয়ানমারে গিয়ে। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে এশিয়ান কাপের মূল পর্ব। তার আগে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার যথেষ্ট সময় আছে। সময়টা কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। ‘২০২৬-এর মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়ান কাপ হবে। সেখানেও আমাদের অনেক সুযোগ আছে। সেরা ছয়টি দল চলে যাবে বিশ্বকাপে। পরের দুটি দল আবার খেলবে অলিম্পিকে। কাল-পরশুর ভেতরে আমি বাফুফে সভাপতির সঙ্গে কথা বলব। অবশ্যই পরিকল্পনা আছে এশিয়ান কাপ নিয়ে। কারণ সুযোগ বারবার আসে না। আমাদের যেহেতু সুযোগ এসেছে, আমরা সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করব।
আমরা অবশ্যই আরও শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে চাই। কারণ এশিয়ান কাপ যখন খেলতে হবে, তখন কিন্তু অনেক শক্তিশালী দেশ খেলবে- জাপান, কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া থাকবে। তাই সেই প্রস্তুতি নিয়েই আমাদের যেতে হবে। যে কয় মাস পাব, আমি সেটাকে সেভাবে ব্যবহার করব।’ বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মঞ্চে তোলা কোচ বাটলারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিরণ।
মূল পর্বে সেরা ছয়ে থেকে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন পূরণে এই ইংলিশ কোচের হাত ধরে মেয়েরা এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদী তিনি। ‘ধন্যবাদ পিটার জেমস বাটলারকে। সে অনেক ভালো কোচ এবং সে জানে ডাগআউটে থেকে কীভাবে দলকে এগিয়ে নিতে হবে; সে এই কাজটাই করেছে। তার সঙ্গে আমার অনেকবার কথা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও আমরা সেভাবে এগিয়ে যাব।’ তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে বাটলারের সঙ্গে সেভাবেই কথা হয়েছে। আমাদের মনোযোগ ও নজর থাকবে সেখানে, যেন আরও ভালো কিছু করতে পারি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সেরা ছয়ে থাকার। আমাদের তো অনেক বড় স্বপ্ন-বিশ্বকাপ খেলা। সেটার জন্যই আমরা মাঠে নামব, সেটার জন্যই কাজ করব।’
শক্তিশালী মিয়ানমারের বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলের জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা ঋতুপর্ণা চাকমার প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ হলেন কিরণ। তাকে বাংলাদেশের ‘মেসি’ বলে প্রশংসায় ভাসালেন তিনি। ‘ঋতুপর্ণা বাংলাদেশের মেসি। হামজাও (চৌধুরী) ভালো ফুটবলার, কোনো সন্দেহ নেই। হামজাও আমাদের দেশের জন্য গর্বের। সামনে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আছে, আমার বিশ্বাস সেখানেও হামজা ভালো করবে।
ছেলেরাও এগিয়ে যাবে। ছেলে-মেয়ে দুটো দলই আমাদের, তুলনা করার কিছু নেই। কিন্তু ঋতুপর্ণা আমাদের মেসি, এটার বলার অপেক্ষা নেই। ও যেভাবে বল টেনে নিয়ে যায়, মেসি ছাড়া আর কারও মতো নয়।’