বাংলাদেশের দাবার ইতিহাসে অন্যতম সেরা গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের চলে যাওয়ার এক বছর পূর্তি হয়েছে চলতি মাসেই। মৃত্যুর পর দাবা ফেডারেশনের তৎকালীন নেতৃত্ব জিয়ার পরিবারের জন্য অর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল (গত নভেম্বরে ফেডারেশনে নতুন নেতৃত্ব এসেছেন)। কিন্তু জিয়ার স্ত্রী জানিয়েছেন, বিদায়ী ফেডারেশন থেকে এক কোটি টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু কোনো আর্থিক সহায়তা পাইনি। পরে দাবা ফেডারেশনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন শামীম বলেন, ‘দেশে পরিবর্তন আর নানা অস্থিরতার কারণে ফান্ড গঠন আর সম্ভব হয়নি।’ তবে জিয়ার পরিবারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওও)।
গত বছরের ৫ জুলাই দাবা খেলতে খেলতে মারা যান গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। তার এই মৃত্যু দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে কাঁদিয়ে ছিল। চোখের পলকেই কেটে গেল এক বছর। ছেলে তাহসিন তাজওয়ারের সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে এ নিয়ে শঙ্কায় জিয়ার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য। জিয়া দেশের হয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক দাবা অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেছেন। সর্বোচ্চ সংখ্যক জাতীয় চ্যাম্পিয়নও তিনি। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে শতাধিক চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। জিয়ার অনেক শিষ্য ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার। দাবাই ছিল তার ধ্যান জ্ঞান। এমন কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদের অকাল প্রয়াণে তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম শীর্ষ সংস্থা বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)। দুই দফায় তারা জিয়া পরিবারকে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিওএ ভবনে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শেফাউল কবির জিয়ার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্যর হাতে দ্বিতীয় দফার ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় জিয়ার একমাত্র পুত্র ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও উপস্থিত ছিলেন। জিয়ার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এই সময়ে আমাদের অর্থের খুব প্রয়োজন ছিল। বিওএ’র এই অর্থ তাহসিনের শিক্ষা ও খেলার জন্য খুব কাজে আসবে। বিওএকে ধন্যবাদ আমাদের পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন্য।’
বিওএর ১০ লাখ ছাড়া ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ৫ লাখ, ক্রিকেট বোর্ড তাহসিনের খেলার জন্য দুই দফায় বিশ লাখ, আর ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা পেয়েছিল জিয়ার পরিবার। জিয়ার স্ত্রী এই সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি স্থায়ী ও বড় সহায়তা প্রত্যাশী, ‘অনেক ক্রীড়াবিদ সরকার থেকে জমি, ফ্ল্যাট বা বড় অঙ্কের সহায়তা পায়। জিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে যে অবদান এরকম কিছু পেলে আমার তাহসিনের জন্য একটু স্বস্তি হতো।