
রাজনৈতিক পালাবদলের পর সংকটে পড়েছিল দেশের ঐতিহ্যবাহি ক্লাব আবাহনী লিমিটেড। তবে এবার সেটি কাটিয়ে লড়াকু দল গড়েছে আকাশি-নীল খ্যাত দলটি। কতটুকু লড়াকু সেই পরীক্ষা আজই দিতে হবে আবাহনীর। তবে ঘরোয়া নয়। কারণ, এখনও মাঠে গড়ায়নি ঘরোয়া ফুটবল মৌসুম। তাই এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ দিয়ে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে দলটি। মিশন শুরুর আগে বেশ ফুরফুরে মারুফুল হকের শিষ্যরা। এক সুলেমানে দিয়াবাতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় আবাহনী আরও উজ্জীবিত। মালির স্ট্রাইকারকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দলটির। এরই সঙ্গে মোরসালিন-আল আমিন-আসাদুজ্জামান বাবলুদের নিয়েই মঙ্গলবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্লে অফে কিরগিজস্তানের মুরাস ইউনাইটেডকে হারাতে চায় আবাহনী। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল ৫টায়। আগের দিন গতকাল সোমবার বাফুফে ভবনে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে কিরগিজ দলের কৌশল ধ্বংস করে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান স্বাগতিকদের কোচ ও অধিনায়ক। ঘরোয়া ফুটবল এখনও শুরু হয়নি। কিন্তু আবাহনী তাদের চলতি মৌসুমের ফুটবল অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের বাছাই দিয়ে। কোচ মারুফুল হক চেয়েছিলেন অন্তত ৪ সপ্তাহ অনুশীলন করাতে। কিন্তু সব মিলিয়ে ২৬ দিন সময় পেয়েছেন।
আবাহনীতে এবার প্রথম যোগ দিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের শেখ মোরসালিন, পুলিশ এফসির আল আমিন, সৈয়দ কাজেম শাহ ও মোহামেডানের সুলেমানে দিয়াবাতে। যদিও দিয়াবাতে মাত্রই এক দিন আগে মালি থেকে ঢাকায় এসে আকাশী নীলদের জার্সিতে যোগ দিয়েছেন। এদের সঙ্গে রয়েছেন গত মৌসুমে খেলা মোহাম্মদ ইব্রাহিম, পাপন সিং, হাসান মুরাদ, আসাদুজ্জামান বাবলু, ইয়াসিন খান, মিতুল মারমা সহ অন্যরা। সব মিলিয়ে একটা ব্যালান্সড দল নিয়ে লড়াইয়ের অপেক্ষা মারুফুলের।
এএফসির প্রতিযোগিতায় আবাহনী পরিচিত একটি নাম। এর আগে এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপে ৩ বার ও এএফসি কাপে অংশ নিয়েছে ৫ বার। এরমধ্যে জোনাল সেমিফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে। এবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে প্রথমবার খেলার অপেক্ষায়। মুরাস ইউনাইটেডের বিপক্ষে মাঠে নামতে মুখিয়ে আছেন আবাহনীর ফুটবলাররাও।
কোচ মারুফুল হক বলেছেন, ‘মাঠের মধ্যে ফুটবলররা যদি পাজলড হয়ে না যায়, তাড়াহুড়ো না করে আর ভয় না পায় এবং আমার ট্রেনিং যদি অনুসরণ করে, তাহলে সাকসেস পাবো। একটা জিনিস হলো সৃষ্টি করার চেয়ে ধ্বংস করা সহজ। আমি সেই পথেই অগ্রসর হচ্ছি।’ ইউক্রেনের ফুটবলার নিয়ে এসেছে মুরাস ইউনাইটেড। তাতে অবশ্য ভয় পাচ্ছেন না মারুফুল, ‘ওদের খেলায় ইউরোপিয়ান ধাঁচ রয়েছে। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আমার জানা আছে। আমি এই দলকে নিয়ে চিন্তিত নই। তাদের দলে ইউক্রেনের অনেক খেলোয়াড় আছে, বিশেষ করে রক্ষণের চারজনই তাদের ইউক্রেনের। তারা প্রফেশনাল টিম, তাড়াতাড়ি তারা প্রতিপক্ষকে বুঝতে পারবে। তাদের জন্য এটা কোনো ডিস অ্যাডভান্টেজ না। যেহেতু টেকনিক্যালি, ট্যাকটিক্যালি আমাদের খেলোয়াড় ওদের থেকে পিছিয়ে, এখানে আরেকটা বিষয় আছে মেন্টালি। এখানে যেন আমাদের খেলোয়াড় এগিয়ে থাকে। মেন্টালি অনেক সময় প্রুতপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়া সহজ, আমি সেই পথেই হাঁটছি।’
সুলেমানে দিয়াবাতে থাকায় এবার আরও আশাবাদী আবাহনী কোচ, ‘ওর সামর্থ্য সম্পর্কে আমার জানা আছে। কাল অনুশীলনে আমার পরিকল্পনা তাকে শেয়ার করেছি। সে ওটা নিতে পেরেছে। প্রায় ৫০ ভাগ করতে পেরেছে। আমি আশাবাদী সে যদি ৫০ ভাগও করতে পারে কাল এতেই আমি খুশি।’ আবাহনী তাদের সর্বশেষ এএফসি কাপ খেলেছিল ২০১৯ সালের ১৫ মে। সেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই ঢাকা স্টেডিয়ামেই। চেন্নাই সিটি এফসির বিপক্ষে ওই ম্যাচে আবাহনী ৩-২ গোলে জেতে। এবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগেও নিজেদের মাঠে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায় আকাশী নীল দলটি। আবাহনীর অধিনায়ক আসাদুজ্জামান বাবলু সেই কথায় শোনালেন, ‘সেবার ওই জয় দিয়েই আবাহনী গ্রুপ ই-তে শীর্ষে থেকে নক-আউট পর্বে উঠেছিল। এবারও আমরা প্লে-অফ খেলবো সেই স্টেডিয়ামে। আশা করি এবারও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বো আমরা।’
অপরদিকে আবাহনীর বিপক্ষে জয় পেতে মুখিয়ে আছেন কিরগিজস্তানের কোচ পুসকভ সারগেই। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা আমাদের সেরাটা দেব জেতার জন্য। আমরা নতুন দল, তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করব আমরা।’ এরপর যোগ করেন, ‘আমি এক বছর ধরে দলটির কোচ। আমরা কিরগিজস্তানে ঘরোয়া কাপ জিতেছি। যে কারণে আমরা এখানে আছি। এশিয়ান ফুটবলে নিজেদের তুলে ধরার ভালো সুযোগ এটি।’ যদিও আবাহনী সম্পর্কে তেমন কোনও ধারণা নেই তার, ‘এখন পর্যন্ত আমরা আবাহনীর একটি ম্যাচই পেয়েছি ২৭ মে যেটা খেলেছিল। সেই ম্যাচ দেখে আমরা অ্যানালাইস করার চেষ্টা করছি। আমাদের দলটা অর্ধেক স্থানীয় ও অর্ধেক বিদেশি খেলোয়াড়ে পরিপূর্ণ। দলের পরিবেশ খুবই বন্দুত্বপূর্ণ। আশা করি সেটা আমাদের জিততে সহায়তা করবে।’ আবাহনী তাদের সর্বশেষ এএফসি কাপ খেলেছিল ২০১৯ সালের ১৫ মে।
এবং সেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই ঢাকা স্টেডিয়ামেই। চেন্নাই সিটি এফসির বিপক্ষে ওই ম্যাচে আবাহনী ৩-২ গোলে জেতে। এবার এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায় আকাশী নীল দলটি। আবাহনীর সবার হয়ে যেন অধিনায়ক আসাদুজ্জামান বাবলু সেই কথায় বললেন, ‘সেবার ওই জয় দিয়েই আবাহনী গ্রুপ ই থেকে শীর্ষে থেকে নক-আউট পর্বে উঠেছিল। এবারও আমরা প্লে-অফ খেলব সেই স্টেডিয়ামে। আশা করি এবারও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ব আমরা।’