ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

ভারতকে হারিয়েও আফসোস বাংলাদেশের

ভারতকে হারিয়েও আফসোস বাংলাদেশের

অপির্তা বিশ্বাসেরা নিশ্চয় আফসোসে পুড়ছেন। ভুটানের সঙ্গে ম্যাচে পয়েন্ট না হারালে হয়তো চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটা নিয়েই দেশে ফিরতে পারত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। কিন্তু সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের লিগ পদ্ধতির শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়েও তাই রানার্স আপ লাল সবুজ দল। গতকাল রোববার ভুটানের চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে রাউন্ড রবিন লিগের ফিরতি লেগে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারায় বাংলাদেশ। আগের দেখায় তাদের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল মাহবুবুর রহমান লিটুর দল। ভুটানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতা শুরু করা বাংলাদেশ ফিরতি দেখায় তাদের বিপক্ষে ১-১ ড্র করে। বাংলাদেশের ওই ড্রয়ের দিনেই নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জয় নিশ্চিত করে ফেলে ভারত।

মেয়েদের বয়সভিত্তিক সাফে এমন রোমাঞ্চকর লড়াই খুব কমই দেখা গেছে। এদিন পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচটি। কখনও মনে হয়েছে বাংলাদেশ জিতবে। কখনও মনে হয়েছে ভারত। এক পর্যায়ে এগিয়ে গিয়েও বাংলাদেশ নিজেদের লিড ধরে রাখতে পারে নি। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে স্কোর ৩-৩ করে ভারত। কিন্তু যোগ হওয়া ৫ মিনিট যেন মরণ কামড় দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা। শেষ বাঁশি বাজার খানিক আগে গোল করেন প্রীতি। রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ভারতের মেয়েরা। আর প্রতিশোধের আনন্দে অর্পিতা, পূর্ণিমাদের চেহারায় স্বস্তির রেশ। দুই দলের পয়েন্ট টেবিলের অবস্থানের সুবাদে ম্যাচটি হয়তো ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। আগের ৫ ম্যাচের সবকটি জেতা ভারত এই ম্যাচের পরও ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রইল। তবে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট হয়েছে ১৩।

গতকাল কিক অফের পর প্রথম আক্রমণ থেকেই ভারতকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরুর ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মামনি চাকমার লম্বা ক্রসে মাথা ঠুকেই উদযাপনে মাতেন পূর্ণিমা মারমা। ৯ মিনিটে বাংলাদেশের অগোছালো রক্ষণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান ভারতের আনুশকা কুমারী। তবে এই সমতা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে নি ভারত। ৩৪ মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলকিপারের হাত ছুঁয়ে আসা বল নিখুঁত শটে জালে জড়ান আলপি আক্তার। ৪৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠে বাংলাদেশ। ভারতের হাইলাইন ডিফেন্সের ফাঁক গলে বল সোজা বক্সের ওপর, সেখান থেকে চমৎকার শটে স্কোরলাইন ৩-১ করেন সৌরভী আকন্দ। যেটা এ টুর্নামেন্টে তার ষষ্ঠ গোল।

দুই গোলে এগিয়ে থাকার পরও রক্ষণ নিয়ে ভয়ে ছিল বাংলাদেশ। আর সেই সুযোগটাই খুঁজে নেয় ভারত। ৬৫ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে পাওয়া লং শট বাংলাদেশের গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠান পৃতিকা বর্মণ। ৮৮ মিনিটে তৃতীয় গোলও হজম করে বাংলাদেশ। কিন্তু যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বাংলাদেশের সৌরভীর শট আটকাতে গিয়ে বলের নাগাল পান নি ভারতের গোলকিপার মুন্নি। প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় চেষ্টায় বল টেনে বের করার পথে সতীর্থ খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল জালে চলে যায়। তবে রেফারি গোলটি দিয়েছেন সৌরভীকেই। যা টুর্নামেন্টে তার সপ্তম। ম্যাচ হেরে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি ভারতের ফুটবলাররা। তাদের কান্না যেন জানান দেয়, চ্যাম্পিয়ন হলেও এভাবে হারতে চায় নি তারা। তা ছাড়া এই টুর্নামেন্টে এটাই তাদের প্রথম হার।

গত শুক্রবার স্বাগতিক ভুটানের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করায় শিরোপা জয়ের সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যায় বাংলাদেশ দলের। দিনের অন্য ম্যাচে নেপালকে ৫-০ গোলে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত