ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হামজাকে ছাড়াই নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ

হামজাকে ছাড়াই নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকার নাম হামজা চৌধুরী। তার পরেই আছেন সামিত সোম। তবে নেপালের বিপক্ষে লড়াইয়ে এই দুই প্রবাসীকে ছাড়াই মাঠে নামছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আজ কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ফিফা প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হচ্ছেন হাভিয়ের কাবরেরা শিষ্যরা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা হামজা ও কানাডার সামিত না থাকলেও জয়ের আশাবাদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ। গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরা বলেন, ‘আমাদের দলের অর্ধেক খেলোয়াড় প্রায় ২০ দিন বাংলাদেশে অনুশীলন করেছে, বাকিরা এখানে আসার কয়েক দিন আগে যোগ দিয়েছে। আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত। অনেকদিন ধরে আমরা নেপালের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করছিলাম। আমার মনে হয় দুটো দলই সমপর্যায়ের, একই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের যাচাই করার জন্য এটি দারুণ চ্যালেঞ্জ হবে। সেটা আমাদের দু’দেশের জন্যই। ম্যাচ দুটি নিয়ে আমরা খুবই ইতিবাচক ও রোমাঞ্চিত।’

নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিকে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন কাবরেরা, ‘আমরা চারটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি দুটো পুলিশের বিপক্ষে, দুটো ফর্টিসের বিপক্ষে। দুটো ম্যাচ ইতিবাচক ছিল, যেমনটা জামালও বলেছে, এই ক্যাম্প আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ নয়, আমরা হংকংয়ের প্রস্তুতিও নিচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, এটি একেবারে নিখুঁত প্রস্তুতি।’ নেপালের মাঠে তাদরে বিপক্ষে খেলা যে কঠিন তা মানছেন কোচ, ‘বাংলাদেশের জন্য এখানে খেলা সবসময় কঠিন। আমার একমাত্র অভিজ্ঞতা হলো ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, তখন আমরা হাফটাইমে ৩-০ গোলে পিছিয়ে ছিলাম। সত্যিই কঠিন ছিল। আমরা এবারও খুব শক্ত প্রতিপক্ষ আশা করছি, তবে বিশ্বাস করি এবার আমরা আরও ভালো করবো। মাঠের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়, তবে আশা করি বৃষ্টি হবে না। যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে দর্শকেরা একটি ভালো খেলা দেখতে পাবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হলো। সেখানে শুরু থেকে খেলতে না পারার ব্যাখ্যাও দিতে হচ্ছে তাকে। নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে এসেছে তার খেলার প্রসঙ্গও। যদিও সেটি ছাপিয়ে স্বাগতিকরা যে আগের চেয়ে শক্তিশালী দল, সেটাই জোর দিয়ে বলেছেন তিনি। নেপাল ম্যাচের গুরুত্ব বোঝাতে কাঠমান্ডুতে জামাল বলেছেন, ‘এখন আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। এই ম্যাচ দুটোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম, কারণ এগুলো আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী মাসে আমাদের এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ আছে। তাই এই দুটি ম্যাচ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মুখিয়ে আছি।’ নিজের খেলার বিষয়ে আগের দেখানো যুক্তির কথাই পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি, ‘খেলবো কি খেলবো না, সেটি আমার হাতে নেই। সেটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তবে অবশ্যই একজন খেলোয়াড় হিসেবে সবাই খেলতে চায়। আমাদের দলে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, আর ফুটবল মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নিজের সর্বোচ্চটা দিলে তবেই হয়তো জায়গা মিলবে দলে।’ এ সময় ঘরোয়া ফুটবল নিয়েও জামালকে কথা বলতে হয়েছে। তার উত্তর ছিল, ‘আমার মনে হয় প্রতিটি দেশের জন্যই শক্তিশালী লিগ থাকা জরুরি। যদি শক্তিশালী লিগ থাকে, তবে স্থানীয় খেলোয়াড়রা উন্নতি করবে। আর দেশের ফুটবলও উন্নতি করবে। শক্তিশালী লিগ মানে ভালো অবকাঠামো, ভালো স্টেডিয়াম, ভালো সুযোগ-সুবিধা। আমি আশা করি নেপালও একই পথে এগোবে।’ নেপাল দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের প্রশংসা করে জামাল বলেছেন, ‘আমার মনে হয় নেপাল আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ওদের পারফরম্যান্স দেখে বোঝা যায়। সিঙ্গাপুরে গিয়ে খেলাটা সহজ নয়। আর এখানে খেলতে আসাটাও প্রতিপক্ষের জন্য সবসময় কঠিন।’

নেপালকে শক্তিশালী বললেও কাঠমান্ডুতে নিজেদের লক্ষ্য যে জয়, সেটা আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘সবার প্রত্যাশা একই-আমরা এখানে তিন পয়েন্টের জন্য এসেছি। আপনি যেকোনো খেলোয়াড়কে জিজ্ঞেস করতে পারেন, সবাই একই উত্তর দেবে। আমরা জিততে এসেছি, তবে একইসঙ্গে ভালো পারফরম্যান্স করতে এবং নিজেদের ও দর্শকদের দেখাতে যে আমরা উন্নতি করছি, বিশেষ করে আগামী মাসের জন্য। আগামী মাস আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ আজকের ম্যাচ সামনে রেখে গতকাল টিম হোটেলের ফিটনেস সেন্টারে সকালে ঘাম ঝরিয়েছে দল। সতীর্থদের জিমে রেখে জামাল ছুটলেন রুমে। এরই ফাঁকে নেপাল সফরে আসা বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে একটু কুশল বিনিময়ও সেরে নিলেন। হামজা চৌধুরী না থাকায় ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে অবশ্য জামালের কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব দিতে পারেন হাভিয়ের কাবরেরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত