
ফারুক আহমেদকে সরিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সরাসরি মনোনয়নে বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এরপর বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হন। বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি জানিয়ে ছিলেন টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলার জন্য এসেছেন। নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন বুলবুল। বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি জানিয়েছেন ওয়ানডে ইনিংস খেলতে চান। বুলবুল বলেছেন, ‘টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি খেলা... আমি বলেছিলাম কুইক ইনিংস খেলার। সেটা এখনও শেষ হয়নি। কুইক ইনিংসটা শেষ হোক। আর যদি কন্টিনিউ করতে হয় টি-টোয়েন্টি থেকে ফিফটিতে যাব।’ তবে, তিনি কোন ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করবেন, সেটা ছিল অস্পষ্ট। অবশেষে সেটি স্পষ্ট হতে চলেছে। ঢাকা বিভাগ থেকে নির্বাচন করতে হলে বুলবুলকে বিভাগীয় কিংবা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে থাকতে হবে। ওখানে না থাকতে পারলে তো কাউন্সিলরও হতে পারবেন না।
গত জুলাইয়ে গঠিত ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। দুই মাসের ব্যবধানে আবারও নতুন করে অ্যাডহক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। তবে নতুন সেই কমিটিতে নাই আশরাফুলের নাম। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের জায়গায় যুক্ত হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এ ছাড়া সাথিরা আক্তার জেসির পরিবর্তে ঢাকা জেলার অ্যাডহক কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, মোট ১১ সদস্যের এ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন-২০১৮ অনুযায়ী ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য পরিবর্তন করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের কমিটি থেকে মোহাম্মদ আশরাফুলকে বাদ দিয়ে নতুন সদস্য হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
আগে থেকেই ঢাকা বিভাগের পরিচালক হয়ে নির্বাচনের গুঞ্জন আছে তার। সেই গুঞ্জন যেন সত্যি হওয়ার পথে আরও এক এগিয়ে গেল। দুই মাসের ব্যবধানে কমিটি পরিবর্তন করে ৮ সেপ্টেম্বর নতুন অ্যাডহক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে এনএসসি। যেখানে সাবেক অধিনায়ক আশরাফুলকে সরিয়ে ‘ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রাক্তন অধিনায়ক হিসেবে’ আহ্বায়কের পরেই প্রথম সদস্য হিসেবে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এনএসসির এমন সিদ্ধান্তে ঢাকার বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার পরিচালক হয়ে বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথটা সুগম হলো বুলবুলের। বিসিবি সভাপতি ছাড়াও ওই অ্যাডহক কমিটিতে আছেন আরও ১০ জন। যারা সবাই আগের কমিটিতেও ছিলেন। বিভাগীয় কমিটির পাশাপাশি ঢাকা জেলার অ্যাডহক কমিটিতেও পরিবর্তন এসেছে। আগের কমিটিতে ছিলেন সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার জেসি। তাকে সরিয়ে সেখানে নাজমুল আবেদিনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তারা নতুন করে ঢাকা বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য হওয়ায় সেখান থেকে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন করতে পারেন।
ফলে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে এনএনসি মনোনীত কাউন্সিলরশিপেও। এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার (পদটি এখনও শূন্য)। বুলবুল ছাড়াও কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- ক্রীড়া সংগঠক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় রকিবুল হাসান, সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার নিয়ামুর রশীদ, বিসিবির সাবেক পরিচালক খন্দকার জামিল উদ্দিন এবং ক্রীড়াপ্রেমী মো. আনোয়ার হোসেন আরিফ। এ ছাড়াও আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন- ক্রীড়া সংগঠক ও বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, ছাত্র প্রতিনিধি সিফাত সাদিক খান এবং ক্রীড়া সাংবাদিক রেদোয়ান সুলতান।
উল্লেখ্য, কদিন আগেই বিসিবির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। নির্বাচন কমিটিও গঠন করেছে দেশের ক্রিকেট বোর্ড। এদিকে বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তামিম ইকবাল। এমনটা হলে সভাপতি পদে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের সঙ্গে লড়াই হতে পারে বুলবুলের।