ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জাতীয় দলের নির্বাচক হলেন শান্ত, ইতিহাস গড়লেন সালমা

জাতীয় দলের নির্বাচক হলেন শান্ত, ইতিহাস গড়লেন সালমা

কোচিংয়ে মনোযোগ দিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন হান্নান সরকার। হান্নান সরে যাওয়ার পর নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছিলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও আবদুর রাজ্জাক। ফলে দীর্ঘদিন ধরে প্যানেলের একটি পদ খালি ছিল। সেই ফাঁকা জায়গাটি প্রায় ৯ মাস পর পূরণ হতে চলেছে। সাবেক জাতীয় পেসার হাসিবুল হোসেনকে (শান্ত) তৃতীয় নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অন্যদিকে জাতীয় নারী দলের একমাত্র নির্বাচক হিসেবে অনেক দিন ধরে কাজ করে আসা সাজ্জাদ আহমেদ (শিপন) অবশেষে পেয়েছেন একজন সঙ্গী। ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো নারী ক্রিকেটের নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন। এটিকে ‘বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্ত বলছে বিসিবি। বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল শনিবার চূড়ান্ত করা হয় এই দুইজনের নিয়োগ।

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের শুরুর দিকের সেনানীদের একজন সালমা। তার হাত ধরে সূচনা হয়েছে নতুন অনেক কিছুর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। দীর্ঘদিন ধরে দেশের নারী ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিলেন তিনিই। এবার প্রথম নারী নির্বাচক হয়ে গেলেন মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই। খেলা ছাড়ার কোনো ঘোষণা অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও দেননি তিনি। তবে জাতীয় দলে অনেক দিন ধরেই সুযোগ মেলে না তার। বাংলাদেশের হয়ে ৪৬ ওয়ানডের সর্বশেষটি খেলেছেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে, ৯৫ ওয়ানডের সর্বশেষটি খেলেছেন ২০২৩ সালের জুলাইয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্য খেলে যাচ্ছিলেন। নির্বাচক হওয়ার পর তার খেলোয়াড়ি জীবনের এখানেই সমাপ্তি।

বাংলাদেশকে ১৮ ওয়ানডে ও ৬৫ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ২০১৮ এশিয়া কাপ জয়ে তিনিই ছিলেন নেতৃত্বে। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ও উইকেট শিকার করাসহ বেশ কিছু রেকর্ড ছিল তার। বোর্ড সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান জানান, সভাপতি আমিনুল ইসলামের চাওয়ায় মূলত সালমাকে নির্বাচক করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশে প্রথমবারের জন্য মহিলা জাতীয় দলের জন্য শিপনের (সাজ্জাদ) সঙ্গে সালমা খাতুনকে বাড়তি নির্বাচক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সালমা ২০১৪-১৫ সময়ে আইসিসির সেরা বোলার ও অলরাউন্ডার ছিল। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিল। আমার মনে হয় এটা বৈপ্লবিক একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সাহেব।

সালমা থাকায় মহিলা দল আরও ভালোভাবে সহায়তাভাবে, গভীরভাবে (দল নির্বাচন) হবে।’ ছেলেদের নির্বাচক প্যানেল থেকে হান্নান সরে দাঁড়ান গত ফেব্রুয়ারিতে। কোচিং পেশায় মন দিতে এই পদ ছেড়ে দেন তিনি। এরপর থেকেই জায়গাটি ফাঁকা ছিল। সেখানে হাসিবুলকে নেওয়ার কারণ জানালেন বিসিবি পরিচালক ইফতেখার। ‘ছেলেদের দলে নির্বাচকদের একটা জায়গা খালি ছিল। সেখানে আজকে জায়গায় বাংলাদেশের সাবেক পেসার হাসিবুল হোসেন শান্তকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি তৃতীয় নির্বাচক হিসেবে গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও আব্দুর রাজ্জাককে সহায়তা করবে।’ তিনি বলেন, ‘অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ দলে অংশগ্রহণ বিবেচনা করা হয়েছে, সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। আমাদের অন্যান্য বিভাগে, মানে অন্যান্য দলের নির্বাচক আছে নির্বাচক আছে। ওদের চেয়ে অভিজ্ঞ হিসেবে শান্তকে নেওয়া হলো। কারণ শান্ত বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ে অনেক দিন খেলেছে। সেই হিসেবে তাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’ নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন হাসিবুল। একসময় দেশের দ্রুততম বোলার মনে করা হতো তাকে। আগ্রাসী সেই পেসার টেস্টপূর্ব যুগে বেশ কিছুদিন ছিলেন দেশের পেস আক্রমণের নেতা। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটের এক ম্যাচে তার হাঁটুতে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান জাহুর এলাহি ব্যাট দিয়ে আঘাত করার পর বাজেভাবে চোটে পড়েন তিনি। পরে ক্রিকেটে ফিরলেও আগের সেই ধার আর দেখা যায়নি। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফির ফাইনালে শেষ বলে সিঙ্গল নিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের মুহূর্তটিতে ক্রিজে থাকায় দেশজুড়ে লোকের মুখে মুখে ছিল তার নাম। বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টসহ ৫টি টেস্ট খেলেছেন তিনি, ওয়ানডে খেলেছেন ৩২টি। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাকে দেখা গেছে ২০০৮ সাল পর্যন্ত। বিসিবির জুনিয়র নির্বাচক (বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে) হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি দীর্ঘদিন ধরে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত