
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা সহজে কাটছে না। অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পাঠানো চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার দেড় ঘণ্টা পর এ আদেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের আদশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, শুনানি ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতুবি করা হলো এবং সে সময় পর্যন্ত স্থগিত করা হলো। সাধারণ পরিষদে কাউন্সিলর মনোনয়নের ফরম বাতিল করে নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থা বরাবর চিঠি দেন। এ চিঠির বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। রুলে সরকার ও বিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ১০ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন যে, কেন বিসিবি সভাপতির চিঠিকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। এর আগে বিসিবি সভাপতির চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন দায়ের করেন রাজবাড়ির মঞ্জুরুল আলম, গোপালগঞ্জের জসিম উদ্দিন খসরু, লক্ষ্মীপুরের মঈনুদ্দিন চৌধুরী ও টাঙ্গাইলের আলী ইমাম। শুনানিতে রিটকারীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও মো. রফিকুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। রিট পিটিশনে আবেদনকারীরা হাইকোর্টের কাছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবি সভাপতির পাঠানো চিঠির কার্যকারিতা স্থগিতের জন্য আবেদন করেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, যেসব আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থাগুলো অ্যাডহক কমিটির বাইরে থেকে কাউন্সিলর মনোনীত করেছে, তাদের পুনরায় মনোনয়ন পাঠাতে হবে। বিসিবি নির্বাচন আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। তা সামনে রেখে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাউন্সিলর মনোনয়নের জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, আঞ্চলিক সংস্থাগুলো পরিচালনাকারী অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে হবে। কিছু আঞ্চলিক সংস্থা এই নির্দেশনা অনুসরণ না করায় বিসিবি দুই দফায় কাউন্সিলর মনোনয়নের সময়সীমা বাড়িয়েছে। প্রথমে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হলেও এরপর তা আজকের দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এবারের বিসিবি নির্বাচনে পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তামিম ইকবাল। গত রোববার তিনি এই নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক দাবি করেন, এটি বিসিবির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। ‘আসন্ন ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রেরণে সরকারি হস্তক্ষেপ ও সভাপতির নির্বাহী ক্ষমতার অপপ্রয়োগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন’ আয়োজিত হয় রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে।
সেখানে তামিম বলেন, ‘বিসিবির গঠনতন্ত্রে যে বিষয়টা আছে, যারা যোগ্য ও খেলাধুলার সঙ্গে সম্পর্কিত, তাদেরকে চাইলে জেলা প্রশাসক কাউন্সিলার মনোনয়ন দিতে পারেন। বহু বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে। কিন্তু এবার হঠাৎ করে একটা জিনিস নতুন দেখলাম যে, অ্যাডহক কমিটি একটা করা হলো, সেই কমিটি থেকেই কাউন্সিলার মনোনয়ন দিতে হবে। এই বিষয়টি গঠনতন্ত্রের কোথাও বলা নেই।’