
প্রথম ম্যাচের পর বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলার বলেছিলেন থাইল্যান্ড শক্তিশালী দল। তাদের বেঞ্চের যে খেলোয়াড় আছে তা দিয়ে আরেকটি একাদশ গঠন করা যায় অনায়াসে। ফিফা প্রীতি ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে এই ইংলিশ কোচের অনুমানই ঠিক প্রমাণিত হয়েছে। নিয়মিত একাদশের খেলোয়াড় বসিয়ে লাল সবুজ দলের বিপক্ষে বেঞ্চের খেলোয়াড় নামালেন থাইল্যান্ডের কোচ। সেই বেঞ্চের থাই মেয়েরাই হারিয়েছে আফঈদাদের। পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়েও প্রতিপক্ষের সামনে দেয়াল তুলতে পারেনি পিটার বাটলারের দল। গতকাল সোমবার ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে বাংলাদেশকে ৫-১ ব্যবধানে হারিয়েছে থাইল্যান্ড। থাইল্যান্ডের হয়ে জোড়া গোল করেন জিরাপোন মংকোলদি ও ম্যাডিসন ক্যাস্টিন। এক গোল আসে অধিনায়ক সাওয়ালাক পেঙ্গাম পা থেকে। বাংলাদেশের হয়ে ব্যবধান কমানো গোলটি করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র।
এই ম্যাচে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে বাংলাদেশর রক্ষণ। পাঁচজনকে রক্ষণে রেখেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ছিলেন রক্ষণের নেতৃত্বে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোহাতি কিসকু, শামসুন্নাহার সিনিয়র, নবিরন খাতুন ও শিউলি আজিম। সর্বশেষ এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর থেকেই কথা উঠে আফঈদার পারফরম্যান্স নিয়ে। ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ সাফের পর অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়েও তার থেকে আশানুরূপ পারফরম্যান্স দেখা মেলেনি। এদিনও সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন তিনিই।
গোলকিপার রুপনা চাকমা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন। তা না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। একাধিক সেভ করেছেন এই ম্যাচে। লেফট উইং দিয়ে বেশ কিছু আক্রমণ শানান ঋতুপর্ণা চাকমা।
তবে নিখুঁত ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল মেলেনি। ম্যাচের ১২ মিনিটে অধিনায়ক পেঙ্গামের গোলে এগিয়ে যায় থাইল্যান্ড। জিরাপোন মংকোলদি রক্ষণচেড়া পাস ধরে বেরিয়ে যান পেঙ্গাম; তাকে তাড়া করেও পাননি শামসুন্নাহার ও শিউলি। বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারকে পরাস্ত করে নিখুঁত শটে বাংলাদেশের জালে বল জড়ান পেঙ্গাম (১-০)। পিছিয়ে পড়ে পরপর তিনটি আক্রমণ করে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে কার্যকরী ফিনিশিং দেখা যায়নি। ২৩ মিনিটে হাইলাইন ডিফেন্সে বাংলাদেশের পাতা অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে থাইল্যান্ডের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মংকোলদি। কাঞ্জনাপোর্ন সায়েনখুনের বাড়ানো লং পাসে আমলে নিতে সহজেই বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডার নবীরণ খাতুন ও আফঈদা খন্দকারকে পেছনে ফেরেন তিনি। তাকে ঠেকাতে এগিয়ে আসেন রুপনা চাকমা। মংকোলদিও বুদ্ধিদীপ্ত ফরোয়ার্ডের মতো রুপনার মাথার ওপর দিয়ে জালে জড়ান বল (২-০)। ২৯ মিনিটে পাওয়া প্রথম কর্নার থেকে ব্যবধান ২-১ এ নামিয়ে আনে বাংলাদেশ। মারিয়া মান্দার নেওয়া কর্নার কিকে লাফিয়ে
শামসুন্নাহার জুনিয়র হেড নিলে বল পোস্টে লেগে জালে প্রবেশ করে।
কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যে ফের ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় থাইল্যান্ড। লং পাস ধরে অনেকটা পেছন থেকে আফঈদা এবং শামসুন্নাহার
সিনিয়রকে টপকে বলের নিয়েন্ত্রণ নিয়েই বাংলাদেশের জাল কাঁপান থাইল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ম্যাডিসন (৩-১)।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে থাইল্যান্ড। ৫৪ মিনিটে থাই গোলকিপারের পাঠানো সরাসরি বল থেকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন ম্যাডিসন (৪-১)। ৫৭ মিনিটে নিজেদের বক্সে থাই ফরোয়ার্ড মংকোলদির পায়ে মেরে হলুদ কার্ড দেখেন কোহাতি। পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে ম্যাচে নিজের দ্বিতয়ী গোলটি করেন মংকোলদি। থাইল্যান্ড এগিয়ে যায় ৫-১ গোলে। শেষ পর্যন্ত ৫-১ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাটলারের শিষ্যরা। প্রথম প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের কাছে ৩-০ গোলে লাল সবুজ দল।