
শংকাটা আগেই জন্মেছিল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের স্টেকহোল্ডার দেশগুলোর। এমনকি সেই শংকা থেকে বাংলাদেশের অনেক ক্রীড়া ডিসিপ্লিনই এসএ গেমসের ক্যাম্প স্থগিত করে দেয়। গুঞ্জনই সত্যি হল। প্রায় দুই বছর পিছিয়ে গেল দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এই গেমস। ২০২৭ সালের নভেম্বরে গেমস হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক দেশ পাকিস্তান। যা আগামী বছরের ২৩-৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল দেশটির তিন শহরে। গত বুধবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ফেডারেশনগুলোকে এসএ গেমস পিছিয়ে গেছে উল্লেখ করে ই-মেইল করেছে।
সেখানে উল্লেখ করেছে, বাহরাইনে সাউথ এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের সভায় দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে এসএ গেমস অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে আরেক দফা জানাবে ২০২৭ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান গেমস আয়োজন করতে পারবে কি না। ২০২৬ সালে এসএ গেমস অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এটা নিশ্চিত। এক বছর পেরিয়ে পাকিস্তান আদৌ গেমস আয়োজন করতে পারবে কিনা সেটাও সংশয় রয়েছে। পাকিস্তান ডিসেম্বরে যদি কোনো কারণে গেমস আয়োজনে অপারগতা প্রকাশ করে তখন সাউথ এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের আবার নতুন করে স্বাগতিক খুঁজতে হবে। পাকিস্তান সর্বশেষ ২০০৪ সালে ইসলামাবাদে এসএ গেমস আয়োজন করেছিল।
এবার গেমসে বাংলাদেশ ২৬টি খেলায় অংশ নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছিল। কিন্তু অনিশ্চয়তা ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে প্রস্তুতির খরচ না পাওয়ায় কাবাডি, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, উশু, কুস্তিসহ কয়েকটি ফেডারেশন তাদের ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য ফেডারেশনগুলোও ক্যাম্প গুটিয়ে নেবে দ্রুতই। খেলোয়াড়েরা এতে হতাশ। বাংলাদেশের সাবেক দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘দুই বছরের মধ্যে অনেক ক্রীড়াবিদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। অনেকের বয়স হয়েছে, ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফিটনেস না–ও থাকতে পারে। যারা বর্তমান অ্যাথলেট, তারা এই গেমসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এখন সেই আশা ভঙ্গ হলো।’ ইমরানুরকে নিয়ে এবার বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস দলের লক্ষ্য ছিল রিলেতে ভালো করা।
সেটা জানিয়ে ইসমাইল যোগ করেন, ‘গেমস দুই বছর পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা খুব হতাশ। এখন উচিত হবে, পাকিস্তান থেকে অন্য কোনো দেশে গেমস সরিয়ে নেওয়া। অ্যাথলেটদের জন্য এটি মঙ্গল।’ গত জাতীয় সাঁতারে নারী বিভাগে সেরা রোমানা আক্তারও হতাশ। কারণ, সাঁতারুরাও তাকিয়ে ছিলেন এসএ গেমসের দিকে। রোমানা বলেন, ‘এসএ গেমসের দিকে তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদেরা। এখন এটি না হলে খেলোয়াড়দের জন্য বিরাট ক্ষতি। তবে আমাদের ক্যাম্প এখনো বন্ধ হয়নি, এখনো চলছে। ক্যাম্প বন্ধ হলে সবাই নিজের সংস্থায় ফিরে যাবে।’