
ছয় বছর পর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ফিরল টেস্ট। কিন্তু ঘরের মাঠের খেলে বাড়তি সুযোগটা কাজে লাগাতে পারল না স্বাগতিকরা। ভরপুর গ্যালারি স্তব্ধ করে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাল দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন টেম্বা বাভুমা। ৪ নম্বরে নেমে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। এরপর একটা জুয়াও খেলেন তিনি। প্রোটিয়া অধিনায়কের সাহস আছে বলতে হবে। দ্বিতীয় দিনে ১৫ উইকেট পতনের পর তৃতীয় দিনে ছিল পরতে পরতে রোমাঞ্চ। এক পর্যায়ে জিততে ভারতের দরকার ৪৭ রান। হাতে ৩ উইকেট। খাতাণ্ডকলমে ৩ উইকেট থাকলেও আসলে উইকেট ছিল ২টি। কারণ, ঘাড়ের সমস্যায় শুবমান গিল হাসপাতালে। উইকেটে অক্ষর প্যাটেল ও যশপ্রীত বুমরা। তবে অক্ষরের ওপরই ভারতের সব ভরসা। এমন সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বল তুলে দিলেন কেশব মহারাজের হাতে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সামনে বাঁহাতি স্পিনার। অক্ষর এটাকে দেখলেন বড় সুযোগ হিসেবে। প্রথম চার বলের মধ্যেই মারলেন ২টি ছক্কা, ১টি চার। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের সিদ্ধান্ত নিয়ে তখন ধারাভাষ্যকক্ষে প্রশ্ন। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে গেল পরক্ষণেই। ‘লোভে পড়ে’ অক্ষর ছক্কার চেষ্টা করলেন পঞ্চম বলেও, এবার বাভুমার হাতেই ক্যাচ। ঠিক পরের বলে মোহাম্মদ সিরাজ ক্যাচ দিলেন স্লিপে। ভারত অলআউট ৯৩ রানে। তাতে ১২৪ রানের লক্ষ্য দেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার জয়।
ভারতের মাটিতে ১৫ বছরের আক্ষেপ ঘুচল প্রোটিয়াদের। কলকাতা টেস্টে প্রোটিয়াদের জন্য স্পিন ফাঁদ পেতেছিল ভারত। চার স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমেছিল তারা। স্বাগতিকদের সেই ফাঁদে ফেলেই গতকাল রোববার তৃতীয় দিন ৩০ রানের অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিল সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে তিন বল খেলে ঘাড়ে চোট পাওয়া শুবমান গিল হাসপাতালে ভর্তি। ম্যাচের মধ্যে অধিনায়কের ছিটকে যাওয়া ভারতের জন্য ছিল বড় ধাক্কা। এই জয়ে দীর্ঘ এক অপেক্ষার অবসান হলো দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের মাটিতে প্রায় ১৬ বছর পর টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল তারা। এশিয়ার দেশটিতে তাদের আগের জয়টি ছিল ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, নাগপুরে। সেই ম্যাচে ইনিংস ও ৬ রানে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ইনিংসেই চারটি করে উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক অফ স্পিনার হার্মার। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে দুটি করে উইকেট নেন মার্কো ইয়ানসেন ও মহারাজ। এইডেন মার্করামের প্রাপ্তি একটি। ভয়ঙ্কর উইকেটে দিনের শুরুটা ভালোই করে ৭ উইকেটে ৯৩ রান নিয়ে খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা।