ঢাকা সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বাটলার কি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে

বাটলার কি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে

প্রধান কোচ হিসেবে গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের দায়িত্ব পালন করছেন পিটার বাটলার। এই ব্রিটিশ কোচের অধীনে সাফল্য যেমন আছে, তেমনি কিছু বিতর্ক আছে। শোনা যায়, অনেক সময় ব্যবস্থাপনা কমিটির পরামর্শ আমলে নেন না তিনি। যার প্রমাণ মিলেছে সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে খেলা নাসরিন স্পোর্টিংয়ে খেলোয়াড় না ছাড়ায়। তবে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া নারী ফুটবল লিগেও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ছাড়ছেন এই কোচ। যদিও ১১ দলের এই লিগে হাতে গোনা কয়েকটি মানসম্পন্ন দল হলেও বাকিগুলো অনেকটাই গড়পড়তা। বিগত সময় নারী ফুটবল লিগ মানে ছিল অনেক ম্যাচে গোলবন্যা।

মার্চে এশিয়া কাপ শুরুর আগে তাই ঋতুপর্ণা-আফিদারা কতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের মধ্য দিয়ে যাবেন, উঠছে সেই প্রশ্নই। ৫ ডিসেম্বর সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছিল। ঐ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ক্লাব নাসরিন স্পোর্টিং জাতীয় দলের ফুটবলারদের নিয়ে খেলতে চেয়েছিল। জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার ও ফেডারেশন ফুটবলারদের ছাড়েনি। কারণ হিসেবে দেখিয়েছিল এশিয়া কাপের প্রস্তুতি ও টুর্নামেন্টের মান। সাফ ক্লাব কাপে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের খেলোয়াড় থাকলেও বাফুফে ফুটবলারদের ছাড়েনি। অথচ সপ্তাহ তিনেক পরই ঘরোয়া লিগের জন্য ঋতুপর্ণাদের উন্মুক্ত করেছে। এই বৈপরীত্য কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বাফুফে নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘এই প্রশ্ন বাটলারকেই করা উচিত।’ সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে নাসরিন স্পোর্টিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হলে বাংলাদেশের অর্জন হতো। জাতীয় ফুটবলাররা ওই টুর্নামেন্টে খেলতে পারলে তাদেরও প্রস্তুতি হতো।

এই বিষয়ে কিরণ বলেন, ‘ওখানে খেলোয়াড় ছাড়া হলে দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসত। অবশ্যই দেশের সম্মানও বাড়ত। আমি এ নিয়ে অনেক কথাও বলেছি। পিটার ছাড়াও বেশকিছু ইস্যু সেখানে ছিল। যা আমি বলব না, এখন লিগ নিয়েই কথা বলছি।’ ত্রিদেশীয় সিরিজের পরপরই ছিল সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। ঋতুপর্ণা-আফিদাদের সেই টুর্নামেন্ট পিটার খেলতে না দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে কিরণ বলেন, ‘তার (পিটার) কথা হচ্ছে, অন্য কোনো কোচের অধীনে খেলতে দেবে না।’ সাফ ক্লাব কাপে অন্য কোচের অধীনে দিতে রাজি হয়নি, অথচ তিন সপ্তাহ পরেই ঘরোয়া ফুটবল লিগে অন্য কোচের অধীনে খেলছে।

যেখানে সব দলে সমান যোগ্যতাণ্ডসম্পন্ন কোচ, সুযোগ-সুবিধা নেই। ভুটান লিগে খেলা কয়েকজন ফুটবলারের ফিটনেসে ঘাটতি চোখে পড়েছিল সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ড ম্যাচে।

মার্চে এশিয়া কাপের মাত্র এক মাস আগে ঘরোয়া লিগ শেষ হবে। ফলে ফিটনেস-পারফরম্যান্স অনেক কিছুই শঙ্কার মধ্যে। এ নিয়ে কিরণের মন্তব্য, ‘এখন আসলে পিটারকে জিজ্ঞেস করব। অন্য কোচের অধীনে এখন গেল, আগে দেওয়া হয়নি কেন?’

পিটার বাটলার ২০ ডিসেম্বর বড় দিনের ছুটিতে ইংল্যান্ড গেছেন। ৪ জানুয়ারি ফেরার কথা। পিটার বাটলার কোচ হিসেবে পরিকল্পনা দিলেও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাফুফে সেটার ব্যাখ্যা-যৌক্তিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব। সাম্প্রতিক দুই ঘটনায় দুই রকম অবস্থানে বাটলারকে সঠিক জবাবদিহি ও তদারকি কতটুকু করছে ফেডারেশন এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ফুটবলাঙ্গনে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত