ঢাকা ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ, স্বস্তিতে কৃষক

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ, স্বস্তিতে কৃষক

শাহজাহান সাজু, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ১৫০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়েই কাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বোরো চাষিদের মাঝে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডও আশাবাদী, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই বাঁধের কাজ সম্পন্ন হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শতভাগ হাওর অধ্যুষিত ইটনা উপজেলার জিউলের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের শেষ পর্যায়ের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। জেলার ৯টি হাওর অধ্যুষিত উপজেলায় ১২৯টি প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। বেশিরভাগ বাঁধের মাটি ভরাট প্রায় শেষের পথে। চলতি মৌসুমে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫০ কিলোমিটার বাঁধ বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে হাওরের বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর ২০১৮ সালে ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়। এবছর যথাসময়ে কাজ হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

ইটনার কুনিয়ার হাওরের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, "বাঁধের কাজ এবার পৌষ মাস থেকেই শুরু হয়েছে। আগাম বন্যা হলেও ফসল নষ্ট হবে না। আমি এবার ১০ একর জমিতে বোরো লাগিয়েছি, বাঁধ মজবুত হওয়ায় দুশ্চিন্তা নেই।"

নিকলীর জোয়ান শাহী হাওরের কৃষক আবুল কালাম জানান, "এবার বাঁধ ভালো হচ্ছে, আমরা নিশ্চিন্তে জমিতে কাজ করছি। যেসব জায়গায় বাঁধ দুর্বল, সেগুলো আরও মজবুত করলে আরও ভালো হতো।"

মিঠামইনের বড় হাওরের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, "আমাদের চিন্তা সব সময় বাঁধ নিয়ে। এবার বাঁধ মজবুত হচ্ছে, বিশেষ করে নদীর বাঁকগুলোর বাঁধ আরও শক্তিশালী করা হলে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হবো।"

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া এসব বাঁধের কাজের নির্ধারিত মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি বলেন, "প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার ৯টি উপজেলায় ১২৯টি কাবিটা স্কিমের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ চলছে। বিশেষ করে প্রধান নদীগুলোর বাঁকগুলোতে পানির চাপ বেশি পড়ে, তাই সেসব স্থানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে, ফলে কৃষকরা সময়মতো তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।"

চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিই হাওরাঞ্চলে। বাঁধ মজবুত হওয়ায় এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

কৃষক,স্বস্তি,ফসল রক্ষা বাঁধ,হাওরাঞ্চল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত