ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রংপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

১ জনের মৃত্যু, আহত ১১
রংপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

রংপুরে ভয়াবহ কালবৈশাখী ঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছের নিচে চাপা পড়ে মোফাজ্জল হোসেন মিলিটারী (৫৮) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ঝড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। এতে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং সহস্রাধিক গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রংপুর মহানগরীসহ তারাগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

কাউনিয়ার হারাগাছ পৌরসভার নয়াটারী গ্রামের বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন মিলিটারি পুরনো খেজুর গাছের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ২টার দিকে তিনি মারা যান।

ঝড়ে গাছপালা ভেঙে আহত হয়েছেন আরও ১১ জন এবং বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ১০ জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, শতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড এবং সহস্রাধিক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ইরি-বোরো ধান, ভুট্টা, বাদাম, মরিচ, কুমড়া, পাট, শসা, পটল, করলা, শাকসবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাতাসের তীব্রতায় কলাবাগান ভেঙে পড়েছে এবং আম-লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে।

হারাগাছ, সারাই, কুর্শা, শহীদবাগ, বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে নাজিরদহ একতা উচ্চ বিদ্যালয় ও ইমামগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের টিনশেডের ছাউনিও উড়ে গেছে। কৃষক কোবাদ আলী, আ. মজিদ এবং লোকমান আলী জানান, তাদের জমির ভুট্টা ও ধান ঝড়ে মাটিতে নেতিয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার তানিয়া আক্তার বলেন, ধান, পাট, ভুট্টা গাছ মাটিতে হেলে পড়লেও বড় ধরনের ক্ষতি হবে না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুল হক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, রংপুর নগরীতেও ধুলা ঝড়ের পর প্রবল কালবৈশাখী ঝড় এবং বজ্রপাত শুরু হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে ও টিনের চাল উড়ে যায়। ফলে পুরো নগরী লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮ নটিক্যাল মাইল এবং বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০ মিলিমিটার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফসলের ক্ষতি হলেও প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ চলছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র জানতে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে এবং পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

কালবৈশাখী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত