মাত্র ৩০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়েই তছনছ হয়ে গেছে মেহেরপুর জেলার ফসলি জমি ও বাগান। শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া এই ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন আম-লিচু, কলা, পেঁপে ও ধান চাষিরা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা, এখনও অনেক গ্রামে স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ।
চাঁদবিল গ্রামের কৃষক সাজিবুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমির কলা গাছের বেশিরভাগই ঝড়ে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। তার ভাষায়, “দেড় লাখ টাকা খরচ করে চাষ করেছিলাম, তিন লাখ টাকার ফলনের আশা ছিল—সব পুঁজি চলে গেলো।”
একই গ্রামের কৃষক রাশিদুল ইসলাম বলেন, “পেকে উঠা ধান ও পেঁপে গাছ ঝড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন ধান কাটলেও চিটা হবে। আর পেঁপে তো গাছ ভেঙেই গেছে।”
সদর উপজেলার কোলা গ্রামের আমবাগান মালিক শুভ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৪০ লাখ টাকার আম ও লিচুর বাগান কিনেছেন। ঝড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ ফল পড়ে গেছে। তার ভাষায়, “এখন এই বাগান থেকে টাকা তুলবো কীভাবে বুঝতে পারছি না।”
আমঝুপি গ্রামের বাগান মালিক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, খরার কারণে আগেই আম পেকে গিয়েছিল, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগে সংগ্রহ করতে না পারায় ফল ঝরে পড়েছে। এরপর এই ঝড়ে সব শেষ হয়ে গেলো।
এদিকে ঝড়ে ভেঙে পড়েছে অনেক বড় গাছ ও গাছের ডালপালা, সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানের ঘরের টিন উড়ে গেছে, শহরের কিছু জায়গায় আংশিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলেও বেশিরভাগ গ্রাম এখনও বিদ্যুৎহীন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। সোমবারের মধ্যে ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানা যাবে।
জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দ্রুত সহায়তা প্রদান করা হবে।