বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের নির্বাহী সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম বলেছেন, যারা নির্বাচন আসলে মাথায় টুপি দেয় হাতে তসবি নেয় তারাই ধর্ম ব্যবসা করে। আমরা ইসলামী রাজনীতি করি। ইসলামের মূল নীতিতে আমরা একটি সমৃদ্ধ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার চিটাগাংরোড ট্রাকস্ট্যান্ডে (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) থানা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে তিনি আরো বলেন, আইয়ামে জাহিলিয়াতেও মানুষ মেরে তার উপর নৃত্য করার মতো ঘটনা ঘটে নাই কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সেই ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের জন্য আমরা রাজপথে আন্দোলনে ছিলাম। কেউ কেউ বলেছে এগুলো তো আলোচনার টেবিলে আছে তাহলে আন্দোলন করছেন কেন। কিন্তু আজ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার একদিন পরেই একজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর উপর গুলিবর্ষণ প্রমাণ করে আমাদের আন্দোলন সঠিক ছিল। যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা যদি পোষা বিরোধী দল না হতো তাহলে হাসিনা সরকারের পক্ষে এতো বড় ফ্যাসিস্ট হওয়া সম্ভব ছিল না।
তিনি বলেন, কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না করেই নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে। আমরা যে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই এটা দুনিয়ার কোনো তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে সম্ভব নয়। সেটা একমাত্র আল্লাহর প্রেরিত জীবন দিয়ে সম্ভব। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, আমি যদি কাউকে রাষ্ট্র ক্ষমতা দান করি তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, সমাজে ভালো কাজ চালু করবে এবং সমাজের খারাপ কাজগুলো বন্ধ করে দেবে। কিন্তু এতদিন যারা দায়িত্ব পালন করেছে তারা আল্লাহর আইনকে কটাক্ষ করেছে। আল্লাহর আইনের বিপরীতের কাজগুলোকে উৎসাহ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। অনেকে বলে আমরা নাকি ধর্ম ব্যবসা করি। যারা নির্বাচন আসলে মাথায় টুপি দেয় হাতে তসবি নেয় তারাই ধর্ম ব্যবসা করে। আমরা ইসলামী রাজনীতি করি। ইসলামের মূল নীতিতে আমরা একটি সমৃদ্ধ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আঃ জব্বার বলেন, তফসিল ঘোষণার পর একজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষণ করা হয় কিভাবে আমরা জানতে চাই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে সুদ-ঘুষমুক্ত একটি মানবিক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ সত্য ন্যায়ের পক্ষে যারা নেতৃত্ব দিতে চায় তাদের পক্ষে থাকবে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য বলেন, শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বলছি। আজও বাংলার মাটি নিরাপদ হয়নি। কেউ কেউ বলেছিলে খেলা হবে। তারা কিন্তু আজ মাঠে নাই। তাদের কে বলছি আসো খেলা হবে। বাংলাদেশ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি। কিছু সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ নাগরিকদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আমরা ভবিষ্যতে আর কোনো সন্ত্রাস চাঁদাবাজ দেখতে চাই না। তাই জামায়াতে ইসলামীর বিকল্প নাই।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সেক্রেটারি ও মিডিয়া বিভাগের তদারককারী আবু সাঈদ মো. মুন্না বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব দরকার যেটা জামায়াতে ইসলামী ব্যতীত অন্য কোনো দলে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। তাই জামায়াতে ইসলামীকে আগামীতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হবে।
সোনারগাঁ উপজেলার উত্তর জামায়াতের আমির মাওলানা ইসহাক মিয়া বলেন, আজ আমাদের দেশের অলি গলিতে দুর্নীতি, অন্যায় ও অনাচারে সয়লাব। এগুলো থেকে মুক্তি পেতে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার বিকল্প নাই।
নাগরিক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ ও সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার কর্মীরা।
