ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ধর্ম অবমাননার দায়ে বহিষ্কার জয়ী এবার চাকসু প্রার্থী

ধর্ম অবমাননার দায়ে বহিষ্কার জয়ী এবার চাকসু প্রার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ধর্ম অবমাননার দায়ে এক বছরের জন্য বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী জাফরিন সুলতানা জয়ী। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার উদ্দেশ্যে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও তাকে নির্বাচনি প্রচারণার কাজে দেখা যায়নি। তবে গেল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ক্লাব (সিইউডিসি) আয়োজিত ‘চাকসু নির্বাচনি বিতর্ক’ অনুষ্ঠানে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।

চাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের শরীরে মাদকের উপস্থিতি জানার জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর ডোপ টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক ছিল। ডোপ টেস্টের রিপোর্টের পরে চাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। সকল প্রার্থীর ডোপ টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অন্যদিকে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তিসহ ধর্ম অবমাননার দায়ে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এক বছরের জন্য বহিষ্কার হন তিনি। এছাড়া চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে নয়টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল ভবন এলাকা থেকে দেশীয় মাদক গাঁজাসহ জয়ীকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়।

এছাড়াও জয়ী নিয়মিত মাদক সেবন করেন বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠজনেরা। তবুও জয়ীর মতো একজন প্রার্থীর কিভাবে ডোপ টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাফরীন সুলতানা জয়ী বলেন, “আমাকে বহিষ্কার করা হয়নি, কেবল বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল। পরে আমাকে শোকজ করা হয় এবং আমি দুই থেকে তিনবার তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হই। এ ঘটনার পর আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করি ও নিজের আচরণের জন্য অনুতপ্ত ছিলাম। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো বহিষ্কারাদেশ দেয়নি। আমার বহিষ্কারের বিষয়টি নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল, তা করেছিল হলুদ সাংবাদিকেরা।

এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ম অবমাননার দায়ে জাফরীন সুলতানা জয়ীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তি আমাদের বিভাগীয় দপ্তরে এসেছিল। তবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কোনো বিজ্ঞপ্তি আমাদের কাছে পৌঁছায়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ধর্ম অবমাননার দায়ে জাফরিন সুলতানা জয়ীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত করা হয়েছিল৷ এরপর সে তার এ কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে ক্ষমা করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

প্রসঙ্গত, ধর্ম অবমাননার দায়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে জাফরিন সুলতানা জয়ীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষমা প্রার্থনা করায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে জয়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে পুনরায় ভর্তি হন।

ধর্ম অবমাননা,বহিষ্কার,চাকসু,প্রার্থী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত