অনলাইন সংস্করণ
১৫:৩০, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
একুশে পদকপ্রাপ্ত লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিকমাধ্যমে এক শোকবার্তায় তিনি লেখেন, “লোকসংগীতের দেশবরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন আমাদের লালনগীতি, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের এক উজ্জ্বল দীপ্তি, যাঁর কণ্ঠে ছিল বাংলার মাটি, মানুষের আত্মা ও সংস্কৃতির স্পন্দন। তাঁর অনন্য সাধনা ও সুরের ছোঁয়া আমাদের হৃদয়ে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন তিনি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে বারবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে।
গত ৫ জুলাই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিল্পীকে। অবস্থার অবনতি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। চিকিৎসা শেষে ২১ জুলাই তিনি বাসায় ফেরেন।
কিন্তু ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানেন তিনি।
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিকমাধ্যমে অসংখ্য ভক্ত, সহশিল্পী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া উপজেলার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। বাবা দেলোয়ার হোসেন ছিলেন চিকিৎসক, মা রৌফা বেগম গৃহিণী।
শৈশবে ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ি নেন তিনি। পরে রবীন্দ্রনাথ রায়, মোতালেব বিশ্বাস ও ওসমান গণির কাছে শাস্ত্রীয় সংগীত শেখেন। নজরুলসংগীতে তালিম নেন ওস্তাদ আবদুল কাদের ও মীর মোজাফফর আলীর কাছে।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছ থেকে লালনসংগীতের তালিম নেন তিনি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক পান। এছাড়া ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা প্লেব্যাক গায়িকা, ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার অ্যাওয়ার্ড’সহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন।
শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।