বর্তমান যুগে ব্লগিং ও ভিডিওগ্রাফি অনেকের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে ঘোরাঘুরির মুহূর্তগুলো রেকর্ড করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করা এখন এক সাধারণ চিত্র। প্রথম দিকে অনেকে স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করলেও, সময়ের সঙ্গে পেশাদার ভিডিওগ্রাফির জন্য উন্নতমানের ক্যামেরার দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই। কারণ ক্যামেরা দিয়ে এমন সব শট ও রঙের গভীরতা ধরা যায়, যা সাধারণ মোবাইল ফোনে সম্ভব নয়।
ব্লগিং ও ভিডিওগ্রাফির জন্য উপযোগী কিছু ক্যামেরা রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার সহজ এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করে। যেমন—এসজেক্যাম সি৩০০ একটি অ্যাকশন ক্যামেরা, যা ৩০ এফপিএস-এ ৪কে ভিডিও ধারণে সক্ষম। পানির নিচে ৩০ মিটার পর্যন্ত ব্যবহারের উপযোগী হওয়ায় এটি অ্যাডভেঞ্চার ভিডিওর জন্য আদর্শ। এর উন্নত জাইরোস্কোপ এবং হ্যান্ডহেল্ড শুটিং মোড বিভিন্ন কোণ থেকে শট ক্যাপচারে সহায়তা করে। একই সঙ্গে এতে রয়েছে রিমোট কন্ট্রোল ও ডুয়াল ওয়াইফাই সুবিধা।
এসজে১১ অ্যাক্টিভ ক্যামেরাটিও পানিনিরোধী, যাতে ডুয়াল ব্যান্ড ওয়াইফাই এবং স্থির শটের জন্য স্যাটিলাইজেশন স্ক্রিন রয়েছে। এটি দিয়ে ভিডিও ধারণের সময় ছবি তোলাও সম্ভব, যা ব্যবহারকারীদের বাড়তি সুবিধা দেয়।
অন্যদিকে, পেশাদার ভিডিওগ্রাফারদের জন্য ক্যানন ইওএস আর৫ একটি দুর্দান্ত মডেল। এতে রয়েছে ৪৫ মেগাপিক্সেলের ফুল-ফ্রেম CMOS সেন্সর ও ৫-এক্সিস IBIS, যা গিম্বল ছাড়াই হাতে ধরে শুট করা সম্ভব করে তোলে। এই ক্যামেরার ডুয়াল পিক্সেল অটোফোকাস প্রযুক্তি মানুষ, প্রাণী ও যানবাহনের গতিবিধি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্র্যাক করতে পারে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিডিও থেকে হাই কোয়ালিটি স্থির ছবি নেওয়ার সুবিধা এবং এটি যেকোনো আবহাওয়ায় ব্যবহারযোগ্য হলেও তুলনামূলক ব্যয়বহুল।
কমপ্যাক্ট অথচ প্রফেশনাল গ্রেড ক্যামেরা হিসেবে ব্ল্যাকম্যাজিক ডিজাইন পকেট সিনেমা ৪কে ক্যামেরা বেশ জনপ্রিয়। এটি ১৩-স্টপ ডায়নামিক রেঞ্জ ও ডুয়াল নেটিভ ISO সুবিধাসম্পন্ন। এতে রয়েছে ব্যবহারবান্ধব ফ্ল্যাগশিপ মেনু, যা টেকনোলজিতে অনভিজ্ঞরাও সহজে ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিস্তৃত রেঞ্জের লেন্স ব্যবহারের সুবিধা থাকায় ব্লগারদের জন্যও এটি কার্যকর।
অলিম্পাস ওএম-ডি ই-এম১০ মার্ক ফোর মডেলটি হালকা ও কমপ্যাক্ট হওয়ায় যাঁরা ভ্রমণ করেন তাদের জন্য উপযুক্ত। এতে রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেলের লাইভ CMOS সেন্সর এবং ইন্টারনাল স্টেরিও মাইক। যদিও এতে এক্সটার্নাল মাইক্রোফোন পোর্ট নেই, তবে সহজে মোবাইলে ভিডিও ট্রান্সফার করা যায়।
ফুজিফিল্ম এক্স-এস১০ মডেলটি সহজে ব্যবহারযোগ্য মিররলেস ক্যামেরা, যা নবীন ভিডিওগ্রাফারদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এটি ২৪০ এফপিএস-এ ফুল এইচডি স্লো-মোশন ভিডিও ধারণে সক্ষম। এতে চোখ ও মুখ শনাক্ত করে অটোফোকাস পরিবর্তন করা যায় এবং জয়স্টিক ফিচারের মাধ্যমে ফোকাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কম আলোতেও এর পারফরম্যান্স ভালো এবং ঝাঁকুনি রোধে ইলেকট্রনিক আইএস সুবিধা রয়েছে।
সব মিলিয়ে, ব্লগিং বা ভিডিওগ্রাফির জন্য ক্যামেরা নির্বাচন করার সময় ভিডিও কোয়ালিটি, বহনযোগ্যতা ও ব্যবহার সহজতাকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। উল্লিখিত ক্যামেরাগুলো সেই বিবেচনায় ব্যবহারকারীদের জন্য হতে পারে দারুণ পছন্দ।