
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে রোববার রাতে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৬২২ জনে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত দেড় হাজার মানুষ।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আবদুল মতিন জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে কুনার প্রদেশে কমপক্ষে ৬১০ জন এবং নাঙ্গারহার প্রদেশে ১২ জন নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, "কুনার প্রদেশে ৬১০ জন শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১,৩০০ জন। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। একইভাবে, নাঙ্গারহার প্রদেশে ১২ জন শহীদ ও ২৫৫ জন আহত হয়েছেন এবং বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, "প্রভাবিত এলাকাগুলোতে তাৎক্ষণিক সহায়তা নিশ্চিত করতে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট প্রদেশের স্থানীয় কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"
"এরই অংশ হিসেবে আমাদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, খাদ্য ও অন্যান্য সেবাদানকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ সহায়তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে," — বলেন মুখপাত্র।
আফগানিস্তানের টোলোনিউজ জানিয়েছে, কুনার প্রদেশের ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে আহতদের উদ্ধার করে জালালাবাদের নাঙ্গারহার আঞ্চলিক হাসপাতালে আনা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত শত শত আহত ব্যক্তিকে ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে।
আফগান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (ARCS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তাদের মেডিকেল টিমগুলো জরুরি সহায়তা প্রদান করছে।
কুনার ও নাঙ্গারহার প্রদেশের গ্রামীণ এলাকায় সহায়তা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে, বলে জানিয়েছেন আল জাজিরার কাবুল প্রতিনিধি মোহসিন মোমান্দ। তিনি বলেন, "রাস্তাগুলো পাকা নয়। ভূমিকম্পের কারণে অনেক জায়গা পাথরে ঢেকে গেছে। সেখানে এখন যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর।"
মোমান্দ আরও বলেন, "এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের পক্ষে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
"ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বেশিরভাগ ঘর মাটির তৈরি হওয়ায় সেগুলো খুব সহজেই ধসে পড়েছে।"—যোগ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার (৫ মাইল)। এরপর আরও অন্তত তিনটি পরাঘাত হয়েছে, যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ইউএসজিএস আরও জানায়, এই ভূমিকম্পে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে। সংস্থার মডেলিং অনুযায়ী, বিপর্যয়টি “বিস্তৃত” এবং “বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা” রয়েছে।