
ফিলিস্তিনের গাজা শহরে বোমাবর্ষণ আরও জোরদার করেছে দখলদার ইসরায়েল। রোববার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে ১৬টি ভবন। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলীয় নগর কেন্দ্র দখলের উদ্দেশ্যে অভিযান তীব্র করেছে এবং স্থানীয় জনগণকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) গাজা শহরে নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীরা।
এছাড়া গাজা উপত্যকায় আরও দুই ফিলিস্তিনি অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দুর্ভিক্ষজনিত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজা শহরের দক্ষিণ রিমাল এলাকায় অবস্থিত আল-কাওসার টাওয়ারকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত করার দুই ঘণ্টা পর তা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস করে দেওয়া হয়। লাগাতার এই বোমাবর্ষণের ফলে দশ-হাজারের বেশি মানুষ গাজা শহর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
“আমরা জানি না কোথায় যাব,” বলেন গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মারওয়ান আল-সাফি। তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতির একটি সমাধান দরকার… আমরা এখানে ধুঁকে মরছি।”
গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস ইসরায়েলের এই অভিযানকে "নিয়মিতভাবে বেসামরিক ভবনগুলোতে বোমাবর্ষণ" হিসেবে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, অভিযানের উদ্দেশ্য হলো "গণহত্যা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি"।
এক বিবৃতিতে গণমাধ্যম অফিসটি জানায়, ইসরায়েল বলছে তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করছে, কিন্তু “মাঠের বাস্তবতা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে” যে ইসরায়েলি বাহিনী “বিদ্যালয়, মসজিদ, হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি আবাসিক ভবন, শহর, তাঁবু এবং এমনকি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর সদর দপ্তরেও হামলা চালাচ্ছে।”
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, গত চার দিনে গাজা শহরে সংস্থাটির অন্তত ১০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৭টি স্কুল ও দুটি ক্লিনিক, যেখানে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
তিনি লিখেছেন, “গাজায় কোনো জায়গা নিরাপদ নয়। কেউই নিরাপদ নয়”।